রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় ওয়াজ মাহফিলে ভক্তের দান করা একটি আম ৯৫০ টাকায় নিলামে বিক্রি হয়েছে। দেখতে সুন্দর রঙিন অসময়ে গাছে ধরা ওই আমটির ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম।
মোহনপুর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই নিলাম হয়। ওই আমটি ৯৫০ টাকায় কেনেন একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক নামে এক যুবক।
এদিকে একটি আমের অস্বাভাবিক দামে বিক্রির খবর এলাকার ছড়িয়ে পড়লে পরদিন বুধবার সকালে ওই যুবকের বাড়িতে ভিড় জমান আশপাশের উৎসুক জনতা। আমটির সঙ্গে সেলফিও তোলেন অনেকে।
ওয়াজ মাহফিলের সভাপতি মো. দেরাজ উদ্দীন বলেন, উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদের উন্নতিকল্পে ইসলামি জলসার আয়োজন করে মসজিদ কমিটি।
মসজিদের উন্নয়নকল্পে সবাই সেখানে দান করেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওয়াজ চলার সময় স্থানীয় এক নারী আমটি দান করেন। অসময়ের আম দেখে সবার মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়।
সাধারণত বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে দান করা জিনিসগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। বিক্রির সেই টাকা দানের মধ্যে গণ্য হয়। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য; ওই রঙিন আমটি ৯৫০ টাকায় নিলামে বিক্রি হয়েছে। ওই আমটি কেনেন স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক।
সব জিনিস বিক্রি হওয়ার পর আমটি নিলামে তোলা হয়। আমটি কিনতে দাম হাকাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। আমটির দাম ২০ টাকা থেকে শুরু হয়; এরপর দাম গিয়ে ঠেকে ৯৫০ টাকায়। আমটি কেনেন আব্দুর রাজ্জাক।
এ বিষয়ে ওই মসজিদ কমিটির সদস্য সাদেকুল আলম বলেন, মসজিদের উন্নয়নে অনেকেই অনেকে মুরগি, ডিম, সোনার নাকফুল, ফলমূলসহ বিভিন্ন জিনিস দান করেন। কিন্তু সবার নজর ছিল ওই রঙিন পাকা আমটির দিকেই।
অসময়ের এই আম নিলামে বেশি টাকায় বেচা হবে এমনটি ধারণা করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে। যেখানে সোনার নাকফুলের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা উঠেছে সেখানে একটি আমের মূল্যই উঠেছে ৯৫০ টাকা!
রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জিএমএম বারি ডলার বলেন, আমগাছে এখন মুকুল ফুটেছে। পাকা আম হবে আরও দেরিতে। তবে কিছুদিন আগেই ‘বারি-১৪’ নামের রঙিন আমের জাত জাতীয় নিবন্ধন বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু ‘বারি-১৪’ আমও এ সময়ে পাওয়া অসম্ভব। ওই রঙিন আমটি এদেশের নয়, হয়ত বাইরের কোনো দেশের।
আমটির ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মসজিদের উন্নয়ন ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে আমটি এত দামে কিনেছি। মসজিদের জিনিস বেশি দামে কিনলে আমার ওই টাকাগুলো কাজে দেবে। অসময়ের আম কিংবা উৎসাহের বসে এমনটা করিনি।