দেশে
দৈনিক শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এক লাফে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে,
যা আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার
সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৫৫৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ১৮ জনের।
এর আগে গতবছরের ১৬ জুলাই এর চেয়ে
বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৩ হাজার
৭৩৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীার তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে, যা ৫ ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি।
নতুন
শনাক্ত ৩ হাজার ৫৫৪ জনকে নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫
লাখ ৭৭ হাজার ২৪১ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ১৮ জনকে নিয়ে দেশে
করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৭৩৮ জনের মৃত্যু হল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৮৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে
উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ২৫
হাজার ৯৯৪ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম
সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ
ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত
হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত
বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ
বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক
দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৩৭ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ২৪ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২১৯টি ল্যাবে ২৫ হাজার ৯৫৪টি
নমুনা পরীা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ১৮৪টি নমুনা।
২৪
ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত
মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১
দশমিক ১২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীা করা হয়েছে ৩৩ লাখ ৯৬ হাজার ৯২৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ২৬১টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ আর নারী ৬ জন। তাদের ১৭ জন হাসপাতালে ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৭২০ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৫৯৫ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ১২৫ জন নারী।
তাদের
মধ্যে ৪ হাজার ৮৮৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ১৬২ জনের
বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৮৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪২৯
জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৬
জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর
মধ্যে ৪ হাজার ৯২৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬০৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৮৮
জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭০ জন খুলনা বিভাগের, ২৬৫ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৫ জন
সিলেট বিভাগের, ৩৬৯ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের
বাসিন্দা ছিলেন।