টানা
দ্বিতীয় দিন দেশে সাড়ে তিন হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, এক
দিনের মৃত্যুর সংখ্যাও আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ২৫ জনের।
দেশে দৈনিক
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের জুলাই মাসের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মত সাড়ে
তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩ হাজার ৫৫৪ জন নতুন রোগী
শনাক্ত এবং ১৮ জনের মৃত্যুর খবর জানায়।
এর আগে গতবছরের ১৬ জুলাই মাসে এর
চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৩
হাজার ৭৩৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩ হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় এ পর্যন্ত দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮০৮ জনে।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৭৬৩ জনের মৃত্যু হল।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৯১৫ জন রোগী
সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫
লাখ ২৭ হাজার ৯০৯ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের
প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫
লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী
শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন
পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের
৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ
মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৪২ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৩৫ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২২১টি ল্যাবে ২৭ হাজার ৫০২টি
নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮৬টি
নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৭
শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায়
সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
সরকারি
ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ লাখ ১৪ হাজার ২৫৬টি।
আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩০টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ আর নারী ৭ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৭৬৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৬২৫ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ১৩৮ জন নারী।
যারা
মারা গেছেন, তাদের ৪ হাজার ৮৯৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ হাজার
১৭১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৮৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের
মধ্যে, ৪২৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০
বছরের মধ্যে, ৬৬ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০
বছরের কম।
মৃতদের মধ্যে ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১
জন রাজশাহী বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন
রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এর মধ্যে ৪ হাজার ৯৪৭ জন ঢাকা বিভাগের, ১
হাজার ৬০৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৮৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭০ জন খুলনা
বিভাগের, ২৬৬ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৬ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭০ জন রংপুর
বিভাগের এবং ১৯৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।