দেশে টানা দ্বিতীয় দিনের মত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে দেশে ৭ হাজার ৭৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে আরও ৫২ জনের।
আগের দিন রোববার দেশে ৭ হাজার ৮৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে, যা ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় এ যাবৎকালের রেকর্ড।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ জনে। আর তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার ৩১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৯৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪১৪ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত সপ্তাহে প্রথমবারের মত এক দিনে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। তার মধ্য দিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৯ মার্চ ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়।
তিন দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মাঝে শনিবার দৈনিক শনক্তি রোগী ৬ হাজারের নিচে থাকলেও রোববার তা নতুন রেকর্ডে পৌঁছায়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার। এ বছর ৩১ মার্চ তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। গতবছর ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩ কোটি ১৩ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫৪ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৭টি ল্যাবে ৩০ হাজার ২৩৯টি নমুনা পরীা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৪৮ লাখ ১৩ হাজার ৬২৪টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীা করা হয়েছে ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ১১৭টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৫০৭টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ আর নারী ১৮ জন। তাদের মধ্যে ২ জন বাড়িতে মারা গেছেন, বাকীদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
তাদের মধ্যে ৩২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর এবং ১ জনের বয়স বছরের কম ছিলো।
মৃতদের মধ্যে ৪০ জন ঢাকা বিভাগের, ৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন করে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ৩১৮ জনের মধ্যে ৭ হাজার ৪ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৩১৪ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৫ হাজার ২২২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ২৯৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ৪৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৬৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৮০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৯ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ৫ হাজার ৩৪৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬৮০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫১০ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৯৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৭ জন বরিশাল বিভাগের, ৩২৮ জন সিলেট বিভাগের, ৩৮১ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০৫ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।