কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে
করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরীা
বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। এরই মধ্যে তা ২৩
শতাংশের ওপরে চলে এসেছে। বৈশ্বিকভাবে দৈনিক শনাক্ত সূচকে গত রবিবার
বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৯ নম্বর, যা গত মাসের শেষভাগেও ছিল ৩০-এর ঘরে।
টিকা নেওয়ার েেত্র বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ছিল প্রথম ২০টি দেশের মধ্যে। কিন্তু
টিকা পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ এ েেত্রও অনেকটাই
পিছিয়ে যেতে পারে। এসব বিবেচনায় নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে করোনা
পরিস্থিতি সহসাই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়তে পারে।
টিকার বৈশ্বিক পরিসংখ্যানে
দেখা যায়, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত জনসংখ্যার ৩.৩১ শতাংশ বা প্রায় ৫৫ লাখ
মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়া হয়েছে ১৬ কোটি
১০ লাখের বেশি মানুষকে, ভারতে দেওয়া হয়েছে সাড়ে সাত কোটির বেশি মানুষকে।
টিকা প্রাপ্তি নিয়ে সারা বিশ্বেই ব্যাপক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তার কারণ যেসব
প্রতিষ্ঠান টিকা উদ্ভাবন করেছে তার সবই বিভিন্ন উন্নত দেশের। তারা নিজেদের
চাহিদা মেটার আগে বাইরে টিকা সরবরাহ করছে কম। তার পরও রয়েছে নানা রকম জোট ও
নৈকট্যের ব্যাপার। অনেক দেশই এখনো টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি কিংবা
নামমাত্র শুরু করেছে। বাংলাদেশ সে তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে আছে। তার কারণ ভারত
টিকা সরবরাহের েেত্র বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কিন্তু ভারতেরও
সীমাবদ্ধতা আছে। ১৪০ কোটি মানুষের দেশে নিজেদের চাহিদাও ব্যাপক। অন্যান্য
উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের েেত্র বাংলাদেশ এ পর্যন্ত কার্যকর কিছুই করতে
পারেনি। নীতি-সিদ্ধান্তের েেত্রও রয়েছে দুর্বলতা। বেসরকারিভাবে টিকা
আমদানির অনেক আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। দেওয়া
হবে কি না তা-ও স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘের উদ্যোগে কোভ্যাক্স থেকে দুই কোটি ডোজ
টিকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কবে নাগাদ সে টিকা দেশে আসবে তা নিশ্চিত নয়।
এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বগতি সহসা রোধ করা যাবে কি না তা
নিয়েও রয়েছে সংশয়।
করোনা সংক্রমণ রোধের অন্য উপায়টি হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি
ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা। এ েেত্রও রয়েছে ব্যাপক ঘাটতি। বেশির ভাগ
মানুষই এসব উপো করছে। সরকার গতকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের
মতো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও সেটি খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যাচ্ছে না।
গত সোমবারও প্রচুর মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। করোনা থেকে রা পেতে হলে কঠোর
ব্যবস্থা নিতেই হবে।