হাতের মেহেদির রং এখনো মুছেনি। এরই মধ্যে যৌতুকের বলি হলেন শিল্পী রানী দাস (১৯) নামে এক নববধূ। মাত্র ১০ হাজার টাকা ও অর্ধভরি স্বর্ণালঙ্কারের জন্য তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে পলাশ থানা পুলিশ ঘাতক স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে।
নিহতের ভাই শুভ চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারীতে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগর উপজেলার প্রদীপ চন্দ্র দাসের মেয়ে শিল্পী রানী দাসের সাথে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের জিনারদী গ্রামের বিমল দাসের ছেলে শ্যামল দাসের পারিবারিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ নগদ এক লাখ ১০ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার দাবি করেন। বিয়েতে শিল্পীর পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে পক্ষকে নগদ এক লাখ টাকা ও অর্ধভরি স্বর্ণালংকার দেয় হয়। ছেলে পক্ষের দাবিকৃত টাকা থেকে অর্ধভরি স্বর্ণ ও ১০ হাজার টাকা কম দেয়ায় বিয়ের পর থেকেই নববধূ শিল্পীর উপর নির্যাতন শুরু হয়। পরে মেয়ের নির্যাতন সইতে না পেরে যৌতুকের বাকি টাকা ও স্বর্ণ পরিশোধে শিল্পীর স্বজনরা ছেলের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে ৬ মাসের সময় চেয়ে নেয়। কিন্তু তা মানতে নারাজ ছেলের পরিবার। এনিয়ে গত সোমবার সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে স্বামী শ্যামল শিল্পীর গলা চেপে ধরে। এতে তার মৃত্যু হয়।
পরে সোমবার বিকালে পলাশ থানা পুলিশ শিল্পীর লাশ স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় সোমবার রাতে নববধূর ভাই শুভ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে স্বামী শ্যামল ও শ্বশুর বিমলকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দীন জানান, নিহত শিল্পী রানীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা রজু হয়েছে। মামলার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী শ্যামল ও শ্বশুর বিমলকে গ্রেফতার করে আদালতে শোপর্দ করা হয়েছে।