মীর আব্দুল আলীম ||
দেশে লকডাউন চলছে। কিন্তু দেশটার কোন জায়গাই এখন আর লক নেই। পুরটাই আনলক! মার্কেটসব খোলা, বইমেলা চলছে, শিল্প-কারখানা,অফিস-আদালত চলছে, চলছে গণপরিবহনও। সত্যিই অদ্ভদ লকডাউনে দেশ! শুরুতে সরকারের লকডাউনের সিদ্ধান্তটা খারাপ ছিলো না। আরও ১৫দিন আগে থেকেই সরকারের লকডাউনে যাওয়া দরকার ছিলো। তাতে করোনা পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হতো না। যখন লিখছি (৯ এপ্রিল সকাল ৯টা) সেদিন জাতীয় দৈনিকের হেড লাইন “৭৪ জনের মৃত্যুও রেকর্ড” নতুন আতঙ্কেও নাম দক্ষিণ আফ্রিকান ভাইরেন্ট। যা কিনা গত বছরের তুলনায় ৭০ ভাগ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ রোগী। আসলে পরিস্থিতি যা হচ্ছে তাতে এমন ঢিলেঢালা লকডাউন নয় রিতিমতো দেশব্যাপী কারফিউ দেওয়া প্রযোজন।
লকডাউনের ব্যাপারে সরকারের হয়তো দুটো ভয় কাজ করেছে। একটা লকডাউনে গেলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হবে, আরেকটা সাধারণ জনগণের কষ্ট। সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে ব্যাবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের লকডাউনের বিরুদ্ধে আন্দোলন। অবশ্য এরই মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিখন্ন জায়গায় ব্যাবসায়ীরা লকডাউনের পরের আন্দোলনও করেছে। যাই হউক জনগণের জীবনের ভাবনাটাও কিন্তু সরকারের থাকতে হবে। অর্থনীতি আগে নয় দেশের মানুষের জীবন আগে। অদ্ভু¢দ দেশে বাস করি আমরা। দেশের অনেক মানুষ আসলে কোভিড-১৯ আছে তা ভাবতে চায় না। এ ব্যাপারের আমজনতা অত্যন্ত উদাসীন। নিদেন পক্ষে মাস্কটাও তাঁরা ব্যবহার করে না তাই যা হবার তাই হচ্ছে।
অবাক লাগে সরকারিভাবে বলা হচ্ছে দেশ লকডাউনে কিন্তু কোন জায়গাই লক নেই। অবশ্য এর একটা কারণও আছে। লকডাউনে সরকারের যে নির্দেশনা তাতে লকডাউন না মানার অনেক ফাঁক ফোঁকোড় আছে। অনেকটা এমন “বজ্র আঁটুনি ফসকা গেড়”। লকডাউনের ব্যাপারে হুঙ্কার আছে; সাথে সিথিলতাও আছে। এমন হাস্যকর লকডাউনের কোনই প্রয়োজনই নেই। প্লিজ লকডাউন তুলে নিন। কোন উপায় নেই যেভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে আর আক্রান্ত হচ্ছে তাতে দেশ ব্যাপী কার্যকর কারফিউ জারি করুণ। র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী নামিয়ে জনগণকে নিয়ম মানতে বাধ্য করুণ। আগে মানুষের জীবন। মানুষ বাঁচান। অবশ্য কারফিউ কিংবা শতভাগ লকডাউন হলে দেশের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়বে। দেশও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে নি¤œ এবং মধ্যম আয়ের মানুষ হয়তো কখনো কখনো না খেয়ে থাকবে। এ ব্যাপারে সরকারকে ভাবতে হবে। দেশের শিল্পপতিসহ সকল বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসীত সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যম এবং পদস্থ্য কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা অর্ধেক করে এমনকি সামনে বৈশাখী উৎসবভাতা, ঈদ বোনাস কর্তন করে গরিব অসহায় মানুষের খাদ্যের জোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ বাহিনী কর্তৃক দরিদ্রমানুষের বিকাশ একাউন্ট তৈরি করে সেসব একাউন্টে বিকশের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করতে হবে। স্থানীয় প্রসাসনের সাথে বিশেষ বাহিনীকে যুক্ত করে খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ বাহিনীর কথা বলছি একারণে পূর্বে আমাদের চাল চুরি, ত্রাণ চুরির অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে এসব বন্টন হলে অনেকটা ত্রুটিমুক্ত হবে।
বর্তমান চলমান অদ্ভুদ লকডাউনে বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলতে হচ্ছে। ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। সেদিন সকালে কোভিড আক্রন্ত হয়ে মরা যাওয়া আমার আল-রাফি হাসপাতালের ব্যবসায়ীক পার্টনার আরমানুজ্জামান ভাইয়ে জানাজায় যাওয়ার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জে এক ঘন্টা সড়কে আটকে পড়ি। জানাজার সময়ও ঘনিয়ে আসছে। গাড়ির ভেতরে ছটফট করছি আমি। এ অবস্থায় আমার ড্রাইভার বিল্লাল বলে উঠে- “স্যার সেইরাম লকডাউন’। আসলে লকডাউনটা সেই রকমই। অন্যদিনের চেয়ে সড়কে গাড়ি বেশি। রাস্তায় শ্রমিক কর্মচারিদের বিশাল লাইন। চলতে গিয়ে বাজারে বাজারে মানুষের জটলা দেখলাম। এটা নাকি লকডাউন! এদেশে সব কিছুই আসলে উল্টো পথে চলে। সরকারে পক্ষথেকে লকডাউনের ঘোষণা এসেছে। আবার বলা হচ্ছে সরকারি নির্দেশনা বলা হয়েছে বই মেলা চলবে, শিল্পকারখানা চলবে, গণপরিবহন চলবে, মার্কেট খোলা থাকবে, ব্যাংক অফিস চলবে। সবই যদি চলে সব খোলা রেখে লকডাউন কেন?
লকডাউনের কথা লিখতে গেলে পণ্য মূল্যের কি অবস্থ্য তাও বলতে হয়। এদেশের মানুষ বেশ অসভ্য। টাকা আছে তাই হুড়মুড় করে বাজার থেকে প্রযোজনের তুলনায় ৪/৫ গুণ খাদ্যদ্রব্য কিনে ঘরে মজুত করে। এবার লকডাউন ঘোষণার পরও তাই দেখেছি আমরা। এর ফলে বাজারে পণ্যের সংকট তৈরি হয় আর তাতে পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। আর দেশের মজুতদাররাও এ সময় ঝোপবুঝে কোপ মারবেন বলে একদম তৈরি থাকেন। সুযোগ বুঝে ১টাকার পণ্য ২টাকায় বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফলে কলাগাছ হন তারা। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ গুলো কষ্টে পড়ে তাতে। ওদের কষ্ট বোঝার লোকতো আর নেই এ দেশে। যারা বুঝবেন (ব্যবসায়ী) তারাতো তৈরি থাকেন গলাকাটার জন্য। তাই যা হবার তাই হয়। এসব বিষয়গুলো সরকারের ভাবনায় আসুক।
আসলে আমরা সতর্ক নই বললেই চলে। লকডাউনেও হাটবাজার পুরোদমেই চলছে। গার্মেন্ট, কলকারখানা নিয়মনীতি না মেনেই জমজমাট। রাজনৈতিক সভাসমাবেশ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, বাজারে মানুষ। জনসমাগম সবখানেই হচ্ছে। আগের চেয়ে বাজারে এখন বেশি মানুষ। মানুষের হুঁশ নেই। টাটকা তরিতরকারী, মাছ, মাংস কিনতে মানুষ বাজারে ছুটছে। চায়ের দোকানের আড্ডাও বেশ জমছে। লোক জড়ো করে দান-খয়রাত, ফটোসেশন কোনটাই বন্ধ নেই। অন্ধ মানুষ, বন্ধ বিবেক। পত্রপত্রিকায় দেখছি, কর্মহীন মানুষ কোথাও কোথাও খোলা মঠে জুয়ার আড্ডায়ও মেতেছে। মানুষ যেন আগের চেয়ে বেশ সচল।
এদেশে কি আইনকানুন মানে কেউ। আইনানুন মানাতে হয়। যারা মানাববার দ্বায়িদ্বে থাকেন তারা ঘরে আরাম আয়েশ করেন। কোভিডে জীবনের ঝুঁকি নিতে চাননা। যাকনা সব গোল্লায় তাতে তাদের কি। জবাবদিহিতাতো নেই এদেশে। সরকার যখন লকডাউন কিংবা কোন জরুরী অবস্থার কথা ভাববেন তখন সরকারের আরেকটা বিষয় ভাবনায় থাকা জরুরী। আইন মানতে বাধ্য করার মতো লোক রাস্তায় নামানো। পাঠক মনে আছে নিশ্চয় ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-ই-দ্দেলার কথা। তিনি আমার খুব কাছের মানুষ। পারিবারিক সম্পর্কও রয়েছে তারসাথে। তাঁর কথা একারণে এ রেখায় টানলাম। এমন সৎ মানুষ সরকারে অনেক আছে। সরকারের যারা আছেন তারা সবাই অসৎ নন। বেছে বেছে এলাকা ভিত্তিক। জেলা কিংবা উপজেলা ভিত্তিক এসব সৎ মানুষদের মনিটরিংয়ের দ্বায়িতে রাখা গেলে ফলাফলটা যে ভালো হবে সেটা নিশ্চিত। আসলে আমাদের ভাবনাটা কম। সবার কথাই ভাবতে হবে। লকডাউনতো মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্যই। তাই মানুষের সার্বিকভাবনাটা সরকারকে ভাবতেই হবে। বিশেষ করে দিনআনে দিন খাওয়া মানুষের কথা। এ সময় তাদেরই বেশি কষ্ট হয়। যারা রাজনীতি করেণ তাদের বলছি। রাজনীতির খাতায় নাম লেখাতে পারলে এদেশে কামাইরোজগার বেশ ভালো হয়। তবে সব রাজনৈদিক নেতার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। অনেক গুণী এবং সৎ, জনদরদী নেতাও আছে। যারা এপথে ওপথে কামাই রোজগার করেন তাদের বলছি। দয়া করে জনগণের কথা ভাবুন। লকডাউনে গরিব অনেক কষ্ট হবে। না খেয়ে থাকবে অনেকে। তাদের সীমাহীন ধনভান্ডার দেখে কিছু দান খয়রাত করবেন প্লিজ। যেভাবে কোভিডে মানুষ আক্রন্ত হচ্ছে আর মানুষ মারা যাবার গটনা গটছে তাতে সরকারে লকডাউন দেওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না। লকডাউনে সরকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশের অর্থনীতির চাকা অচল হয়। তা সামালদিতে সরকরকে হিমশীম খেতে হয়। মানুষের জীবনতো আগে তাই লকডাউনে যেতে হয়েছে সরকারকে। সকারকে সহায়তা করুণ। যার যতটুকু সঙ্গতী আছে সে অনুসারে দান খয়রাত করুণ।
যাই হউক লকডাউনের কথা বলছিলাম। আসলেআগেও দেখেছি এদেশে হাস্যকর লকডাউন আর কোয়ারেন্টাইন চলে। লকডাউনে মানুষ এক জেলা থেকে আরেক জেলায়ও যাচ্ছে। পঙ্গপালের মতো ট্রাক আর কাভার্ডভ্যানে মানুষ ঢাকায় আসছে। নিষিদ্ধ গণপরিবহনও রাস্তায় দেখছি। আমরা কতইনা অসভ্য। অসচেতনতা আর কাকে বলে? যে দেশে জেল জরিমানা দিয়ে মানুষ বশ করা যায় না, সেখানে স্বেচ্ছায় লকডাউন আর বাসগৃহের কোয়ারেন্টিনের কথা শুনি। করোনা ভাইরাস নেগেটিভ আর পজেটিভের দৌড়ঝাঁপ মুখের কথায় বন্ধ করা অন্তত এদেশে অসম্ভব।
লকডাউনে ঢাকা শহরেতো ফাঁকা থাকার কথা। এখনওতো দেখছি যানজটের ঢাকাই। ঢাকা ফাঁকা না। রাস্তা ঘাট মানুষে ঠাঁসা। এখন কোথাও কোথাও আবার ট্রাফিক জ্যাম শুরু হয়েছে। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো খোলা আছে। সুপার মার্কেটগুলোও কিছু খুলেছে। তবে শপিংমলগুলো বন্ধ আছে। নতুন করে করোনার ঢেউ শুরু হওয়ায় সারাবিশ্ব যেখানে সতর্ক সেখানে আমাদের দেশে সবকিছু অনেকটা স্বাভাবিক। পরে হয়তো বুঝতে পারব কতটা তি হলো। লকডাউন ঘোষণার পর মানুষ বাসলঞ্চ নিয়ম না মেনে ঘরমুখো হয়েছে। বিসিএস, এমবিবিএসএর নামে লাখলাখ লো জড়ো হয়েছে। আল্লাহ মাফ করুণ। এর জের নিশ্চয় দিতে হবে। মহামারী করোনাতো ছাড় দেবার কথা না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, সার্স, ডেঙ্গু বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এমন মহাবিপদ থেকে আল্লাহ আমাদের উদ্ধারও করেন। আল্লাহ কিন্ত এও বলেছেন আমরা যেন এমন সময় সাবধান হয়ই। আল্লাহর কথাওকি আমরা মানছি?
ইসলাম ধর্মে এসব রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আল-কোরআনে মহামারী হলে যে যার স্থানে থাকার কথা বলা আছে। অন্য ধর্মেও রোগের েেত্র সতর্ক করা আছে। প্রয়োজন না হলে ক’দিন নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, অন্যের জন্য ঘর থেকে বাহিরে না যাওয়াই ভালো। প্রয়োজন থাকলে কী আর করা! মনে রাখবেন, এ সমস্যা কিন্তু অনেক দিন ধরে থাকবে না। আল্লাহ আমাদের রা করবেণই। কিছুদিন যারা সতর্ক থাকতে পারবেন, সবকিছু ঠিকঠক মেনে চলবেন তারা হয়তো এ বিপদ থেকে অনেকটা মুক্ত থাকতে পারবেন। তবে আমরা বেশিই অসাবধান মনে হয়। কোনো কিছুকেই গুরুত্ব দিতে চাই না কখনো। কোনো কিছু মানতে চাই না। এ অবস্থায় কি আমাদের রা হবে?
করোনায় করুণা করছে না কাউকে। সবচেয়ে ধনি দেশগুলো করোনায় কুপকাত। উন্নত প্রযুক্তি, গবেষণা, করোনার ভেকসিন, কোনটাই কাজে আসছে না। মানুষ মরছে প্রতিদিন। আমাদের আরও প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা কতটা প্রস্তুত? আর কতটা সতর্ক? সতর্কতা খুবই কম। মানুষ কথা শুনতেই চায় না। সরকারের নিয়মের তোয়াক্কা করে না। স্বাস্ত্যবিধী মেনে চলে না। তাতে অনেক ভয়ংকর রূপে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। তাতে সামাল দেয়া কঠিনই হবে। এখনই তা হচ্ছে। সতর্কতার অভাবে করোনাভাইরাসে সারাদেশে মানুষ এমনকি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনেক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। দিনদিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। অরতি অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
হয়তো সামনে সুসংবাদ নেই। ভয়াবহ দিন আসছে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর মিছিলে অসংখ্য মানুষ যুক্ত হচ্ছে। এসময় চিকিৎসকদেরই সবচেয়ে দরকার। চিকিৎসকরা যাতে সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত না হয়ে পড়ে সে ব্যাপারে সরকার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে। তাদের নিরাপদ রাখা খুব জরুরী। তাই আগে চিকিৎসকদের বাঁচান। চিকিৎসক বেঁচে থাকলে রোগীদের বাঁচানো যাবে। মানসম্মত এবং সময় মতো সুরা পোশাক (পিপিই) পাচ্ছে না আমাদের চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকদের যে পিপিই দেয়া হচ্ছে তা মানসম্মত নয়। চিকিৎসকদের সুরা নিশ্চিৎ না হলে; চিকিৎসক, নার্স অসুস্থ হয়ে পড়লে করোনা ভাইরাস চিকিৎসাসহ সাধারণ চিকিৎসায় সংকট তৈরি হবে। চিকিৎসক বাঁচলেইতো রোগীদের বাঁচানো যাবে। আগে চিকিৎসকদের পূর্ণ সুরা দরকার। তাঁরা সুস্থ থাকলে, তাঁদের মনোবল ঠিকঠক থাকলে রোগীদের পূর্ণ চিকিৎসা মিলবে, তা নাহলে নয়। করোনা ভাইরাসের রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে দিনদিন যেভাবে চিকিৎসকরাই আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন তাতে চিকিৎসকসমাজে আতংক তৈরি হয় বৈকি! ইতোমধ্যে হয়েছেও তা। সে কারণে চিকিৎসকদের সাথে জনগণ এবং সরকারে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। সামনে আরও হবে হয়তো।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ না করায় এবং মন্ত্রণালয়ের নানা গাফিলতির কারণে কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবায় বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আক্রান্তদের সেবা দেয়া যাচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রে। হাসপাতালে সাধারণ সিটও নেই। আইসিউসিসিউতো সোনার হরিণ।
যেভাবেই বলি, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যুদ্ধে নামতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। ঘুরতে না যাওয়ার, বেশি মানুষ এক জায়গায় না হওয়ার, চায়ের দোকান, বেশি বেশি বাজার করা, আড্ডাবাজি বন্ধ করতে হবে। করোনা নামক শত্রু এদেশে ঢুকে পড়েছে। সবাই সতর্কতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমরা হয়তো এ যুদ্ধে হেরে যাব। আসুন, সবাই সতর্ক হই। যেকোন মহামারীতে সতর্কতার বিকল্প নেই।
এ যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। যুদ্ধ জয়ের জন্য আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। দিশেহারা হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। করোনা পজেটিভ কিংবা উপসর্গ হলেই ভয়ে কুকড়ে মুকড়ে যাবেন না। করোনা পজেটিভ মানেই মৃত্যু নয়। আপনি নিয়মকানুন মেনে চললে ঠিকই সেরে উঠবেন। মনে রাখবেন, ভাইরাস থেকে রার একটাই পথ, সতর্কতা।
লেখক: মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]