তানভীর
দিপু: কুমিল্লা জেলায় করোনা আক্রান্ত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি
আক্রান্ত এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭ ওয়ার্ডে এই এপ্রিল মাসের ১২ দিনে করোনায়
আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি ঘটেছে ১৫ জনের। আর করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৯৭ জনের। এর
মধ্যে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটাপন্ন অবস্থা নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডের। গত ১২ দিনে এই
ওয়ার্ডে করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ জন। আর করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে
১৫২ জনের। এই ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে হজরতপাড়া, হাউজিং এস্টেট, কাটাবিল,
নুরপুর এলাকা। কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, শনাক্ত ও
প্রাণহানীর বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ করোনা আক্রান্ত অন্যান্য ওয়ার্ডগুলো হলো-
৩, ৫, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৮, ২১ নং ওয়ার্ড।
তবে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের
মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমেন রায় জানান, ১৮ নং ওয়ার্ডে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের অবস্থান হওয়ায় অনেক হাসপাতালে মৃত ও শনাক্ত এই ঠিকানায়ও দেখানো
হয়। একারনেও এখানে মৃত ও শনাক্তের সংখ্যা বেশি হতে পারে।
এছাড়া গত ১২
দিনে নগরীর ১নং ওয়ার্ডে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ জনের, মারা যায়নি কেউ। ২ নং
ওয়ার্ডে শনাক্ত হয়েছে ১২ জনের, মারা যায়নি কেউ। ৩ নং ওয়ার্ডে ৩৭ জনের,
প্রাণহানি ২ জনের। ৪ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত হয়েছে ৮ জনের, প্রাণহানি নেই। ৫ নং
ওয়ার্ডে শনাক্ত ৩০ জনের, প্রাণহানি ১ জনের। ৬ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ১১ জনের,
প্রাণহানি নেই। ৭ নং ওয়ার্ডে করোনা শনাক্ত ১৫ জনের। ৮ নং ওয়ার্ডে করোনা
শনাক্ত ২৭ জনের। ৯ নং ওয়ার্ডে করোন শনাক্ত ১৭ জনের। ১০ নং ওয়ার্ডে করোনা
শনাক্ত ৭২ জনের, মৃত্যু ১ জনের। ১১ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ৩৩ জনের। ১২ নং
ওয়ার্ডে শনাক্ত ১৭ জনের। ১৩ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ৩৩ জনের, প্রাণহানি ১ জনের।
১৪ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ৮ জনের। ১৫ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ৬ জনের। ১৬ নং ওয়ার্ডে
১৬ জনের শনাক্ত। ১৭ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ১ জনের। ১৮ নং ওয়ার্ডে ১৫২ জনের,
প্রাণহানি ৯ জনের। ১৯ নং ওয়ার্ডে ৬ জন শনাক্ত। ২০ নং ওয়ার্ডে ১ জন শনাক্ত।
২১ নং ওয়ার্ডে শনাক্ত ৪৫ জনের, প্রাণহানি ১ জনের। ২২নং ওয়ার্ডে ৯ জনের
শনাক্ত। ২৩ নং ওয়ার্ডে কেউ শনাক্ত নেই। ২৪ নং ওয়ার্ডে ১৬ জন শনাক্ত। ২৫ নং
ওয়ার্ডে ১৬ জন শনাক্ত। ২৬ নং ওয়ার্ডে কেউ শনাক্ত নেই এবং ২৭ নং ওয়ার্ডে ২
জন শনাক্ত হলেও প্রাণহানি নেই।
এছাড়া জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির তথ্য
মতে, কুমিল্লা জেলায় সংক্রমণ শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ। জেলায়
মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ; যেখানে সারা বাংলাদেশে গড় মৃত্যুর হার ১
দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে কুমিল্লায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, যা
সারাদেশের তুলনায়ও বেশি। কুমিল্লায় সংক্রমণ রোধে আগামীকাল থেকে সারাদেশের
যে সর্বাত্মক লকডাউন তা কঠোরভাবে পালন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।
মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা টাউন হলে জেলা
করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। জেলা করোনা প্রতিরোধ
কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন করোনা প্রতিরোধ কমিটির উপদেষ্টা ও সদর আসনের
সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য
রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ, মেডিকেল কলেজের পরিচিালক ডা. মোঃ
মহিউদ্দিন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাৎ হোসেনসহ কমিটির অন্যান্য
সদস্যরা। এছাড়াও সভায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর
ও ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।