রণবীর ঘোষ কিংকর।
করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনে সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ করে সরকার। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করলেও থেমে নেই অন্যান্য গণপরিবহন।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ যানে দ্বিগুন ভাড়ায় অধিক যাত্রী নিয়ে অবাধে চলাচল করছে সিএনজি অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, মারুতি ও নসিমন। ওইসব যানের অধিকাংশ মহাসড়কে চলাচলের অনুমতিই নেই। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রশাসনের চোখের সামনেই অবাধে যাত্রী পরিবহন করছে তারা। এতে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ আরও বিস্তারের সম্ভাবনা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ, নিমসার ও ময়নামতি এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এমন সুযোগে প্রতিটি সিএনজি অটোরিক্সা ও নসিমন চালক প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা, মাইক্রোবাস ও মারুতি চালক ৫-৭ হাজার টাকা আয় করছে।
প্রতিটি মারুতিতে অন্তত ১০ যাত্রী, মাইক্রোবাসে ১৪ যাত্রী, সিএনজি অটোরিক্সায় ৫ যাত্রীর সাথে চালক ও হেলপার থাকায় ভিতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এছাড়া পণ্যবাহী নসিমন ও পিকআপে ৮-১০ যাত্রী নিয়ে ছুটে চলছে এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের সাথে ভাড়াও নিচ্ছে তিনগুন। এতে করে বাসের চালকের মাঝেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সিএনজি অটোরিক্সার যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানান- আমি চান্দিনা থেকে ক্যান্টনমেন্ট যাব। ৭০ টাকা ভাড়ায় সিএনজি অটোরিক্সায় উঠেছি। বাসে ২০ টাকার ভাড়ার স্থলে এখন ৭০ টাকা দিতে হচ্ছে। আর একটি সিএনজিতে চালকসহ ৬জন থাকায় দম ফেলাও কষ্ট।
ওই সিএনজির চালকের সাথে কথা বললে তিনি জানান- ‘বিশ্বরোডে অন্যসময় সিএনজি চালাইতে দেয় না, এহন সুযোগ পাইছি, তাই চালাইতেছি’।
নসিমন চালক ফারুক মিয়া জানান- শনিবার ভোরে নিমসার বাজারে কাঁচামাল নিয়ে যাওয়ার পর কয়েকজন যাত্রী বলেন আমাদেরকে ক্যান্টনমেন্ট দিয়ে আসেন। এসময় ৮জন যাত্রীকে ক্যান্টনমেন্ট নামিয়ে দেওয়ার পর ১৬০ টাকা পাই। ফিরে ক্যান্টনমেন্ট থেকে চান্দিনার সময় আরও ৯জন যাত্রী পেলাম তারা প্রত্যেকে ৫০ টাকা করে দেয়। দেখলাম কাঁচামাল টানার চেয়ে মানুষ টানাই ভাল। তাই আজ দুইদিন যাবৎ মাধাইয়া থেকে ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত মানুষ আনা-নেওয়া করছি।
পুলিশ কিছু বলে না? এমন প্রশ্নে খেয়ালি ভাবেই বললেন- ‘নাহ্, কই? পুলিশের সামনে দিয়াই তো যাইতাছি, কিছু কয় নাই’।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বাস চালক আব্দুল লতিফ তীব্র ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন- ‘বাসেই যত করোনা, বাসের দুই সিটে একজন বসাই তাও বাস বন্ধ করে দিছে, আর একটা মাইক্রোতে ১৪/১৫জন ঢুকাইয়া আনা-নেওয়া করতাছে, তহন করোনা থাহে না। পুলিশও দেহে না’।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান- গণপরিবহন বন্ধ করতে আমাদের হাইওয়ে পুলিশের একাধিক চেক পোস্ট রয়েছে। যেগুলো সামনে পড়ছে সেগুলো আটক করা হচ্ছে।