ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ছেলেদের বিরুদ্ধে পিতা হত্যার অভিযোগ
Published : Thursday, 22 April, 2021 at 8:59 PM
ছেলেদের বিরুদ্ধে পিতা হত্যার অভিযোগবারী উদ্দিন আহমেদ বাবর,
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছেলেদের বিরুদ্ধে পিতা এনামুল হক (৬২) ওরপে এনাম দরবেশকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করে পুকুরের কাদা মাটিতে চাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এনামুল হক উপজেলার জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের জোড্ডা পূর্বপাড়া মিয়াজী বাড়ির মৃত শামছুল হকের ছেলে।  গতকাল বৃহষ্পতিবার সকালে এনামুল হকের স্ত্রী মাফিয়া বেগম বাড়ির পাশ^বর্তী পনিশূন্য পুকুরের কাদামাটি আনতে গিয়ে কাদামাটির ভিতরে এনামুল হকের লাশের সন্ধান পান। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ পুকুর থেকে এনামুল হকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এনামুল হকের পিঠে, গাড়ে এবং মুখে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে। পিতার হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিজ্ঞাবাদের জন্য পুলিশ এনামুল হকের তিন ছেলে নুর মোহাম্মদ সুমন (৩২), নুর আলম সুজন (৩০), শাহপরানকে (২৪) থানা হেফাজতে নেন। পুলিশ ঘরের ভিতর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র দা, বটি এবং রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করেন। এসময় ঘরের মেঝেসহ বিভিন্নস্থানে রক্তের দাগ পাওয়া য়ায়। এনামুল হক গত সোমবার রাত ৯ টার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
সহকারি পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম সার্কেল) সাইফুল ইসলাম, নাঙ্গলকোট থানার ওসি, পি বি আই, ও সি আই ডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জোড্ডা গ্রামের এনামুল হক ওরফে এনাম দরবেশের সাথে গত প্রায় এক বছর ধরে তার ছেলেদের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এনামুল হক কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে তার এক ছেলে শাহজাহানকে প্রবাসে প্রেরণ করেন। অপর ছেলে শাহপরানকেও প্রবাসে প্রেরণের জন্য প্রস্তুতি নেন। এনিয়ে অন্য ছেলেদের সাথে এনামুল হকের বিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিয়াজী একধিকবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধান করেন।
জোড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিয়াজি বলেন, গতকাল বৃহষ্পতিবার সকালে এনামুল হকের লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করার পর তার বড়  ছেলে সিএনজি চালিত অটো রিক্সা চালক নুর মোহাম্মদ সুমন আমার নিকট গিয়ে বলেন, আমাকে বাঁচান। আমি জেলে গেলে মরে যাব। যে ভাবেই হোক আমাকে আপনি রক্ষা করেন। এসময় চেয়ারম্যান সুমনকে বলেন, তোমার পিতার হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করলে আমরা থানার ওসির মাধ্যমে তোমার সাজা কমানোর জন্য সুপারিশ করবো। তখন সুমন তার পিতাকে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। এদিকে অভিযুক্তসুমনসহ অপর দুই ভাই স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে পিতাকে হত্যাকান্ডের কথা অস্বীকার করেন।
নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহত এনামুল হকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যার আলামত হিসেবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার তিন ছেলেকে জিজ্ঞাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। হত্যাকান্ডটি তদন্তনাধীন রয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।