Published : Sunday, 9 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 09.05.2021 1:17:45 AM
তানভীর দিপু:
জনসংখ্যার
ঘনত্বের কথা মাথায় রেখে কুমিল্লা নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে করোনা
চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত
স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম বিষয়ে পর্যালোচনা
সভায় জানানো হয়েছে। শনিবার সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন
কক্ষে এ সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম। সভায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক
মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, সিভিল সার্জন মীর মোবারক
হোসাইন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোঃ মহিউদ্দিন
কুমিল্লার নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা চিত্র তুলে
ধরেন।
সভায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালল ডা. মোঃ মহিউদ্দিন জোর
দাবি জানিয়ে বলেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরো একটি নতুন অক্সিজেন
প্লান্ট ও করোনা পরীক্ষার জন্য মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব স্থাপন করা হোক।
তাহলে কুমেক করোনা ইউনিটে ৩০ বেডের আইসিইউ করা সম্ভব হবে। যা কুমিল্লার
জন্য খুবই প্রয়োজন। কারন, পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও করোনা আক্রান্ত হয়ে
কুমিল্লায় চিকিৎসা নিতে আসছে। এছাড়া কুমিল্লার চিকিৎসকদের আইসিইউ
ম্যানেজম্যান্ট ও ক্রিটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। প্রয়োজনে
সরকারিভাবে অনলাইনে তাদের এই প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে, যা সংকটময় মুহুর্তে
কাজে আসবে।
জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন জানান, কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও সদর হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে। এছাড়া
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং বিভিন্ন কিনিকগুলোতেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে
ভারত থেকে আসা সীমান্তবর্তী জেলা থেকে কেউ যেন অন্য জেলায় যেতে না পারে সে
ব্যাপারে সরকারের আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে জানান। কারণ বেনাপোল
বন্দর হয়ে ভারত থেকে আসা ৫ জন কোয়ারেন্টিন পালন না করেই কুমিল্লায় চলে
আসেন। পরে তাদের কুমিল্লা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
পুলিশ
সুপার ফারুক আহমেদ জানান, একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে কুমিল্লার ৯৫% বাইরে
থাকা মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে- যা করোনা প্রতিরোধে একটি আশাবাদী দিক। এছাড়া
মাস্ক ব্যবহার না করার কারনে কুমিল্লায় বেশ কয়েকটি দোকান বন্ধ করে দেয়ারও
ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লায় মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে প্রাশসন কঠোর অবস্থানে আছে।
এছাড়া আন্তজেলা বাস চলাচল নিয়ন্ত্রনেও পুলিশ ভূমিকা রাখছে, রাতের বেলা
অভিযান পরিচালনা করে এসব নিষিদ্ধ বাস আটকে দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক
মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, করোনা চিকিৎসায় কুমিল্লা এগিয়ে আছে। কিন্তু
কুমিল্লায় শনাক্তের পরিমান বাড়ছে যা নিয়ন্ত্রনে কাজ করতে হবে। করোনাকালীন
সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহা সরূপ ৪৭ হাজার ১৮৫ প্যাকেট ত্রান সামগ্রী বিতরণ
করা শেষ হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলাতেও ত্রান সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঈদের
ছুটিতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সবাইকে বলা হয়েছে স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার
জন্য। ঈদের জামাত মসজিদে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রয়োজনে একাধিক জামাত
হবে। এজন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় সমাপনী
বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম জানান,
এই সময়ে কোভিড-১৯ নিয়ে হতাশ হবার কিছু নেই। ভারতীয় মিউট্যান্ট করোনা ভাইরাস
নিয়ে আমরা কিছুটা ভয়ে আছি। তারপরও নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছি বলেই
কোভিড-১৯ চিকিৎসা নিয়ে আমাদের আরো বেশি কার্যকরি ভূমিকা পালন করতে হবে।