ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পদ্ধতি
Published : Wednesday, 12 May, 2021 at 12:00 AM
আহমাদ রাইদ  ||
আমাদের দেশে ‘ঈদ মোবারক’ বলে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর প্রচলন আছে। কিন্তু সালামের আগেই ‘ঈদ মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করা অনুচিত। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো এই দোয়া পাঠ করা—‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’ বলা। এর অর্থ হলো, আল্লাহ আমাদের ও আপনার প থেকে কবুল করুন। ওয়াসিলা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ঈদের দিন সাাৎ করলাম। আমি বললাম, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। মহানবী (সা.) বললেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।’ (বায়হাকি : ৩/৪৪৬)
তা ছাড়া ঈদের দিন সালাম ও মুসাফাহা ইসলামী শিষ্টাচারের উপাদান। ‘মুসাফাহা’ শব্দের অর্থ হাত ধরা ও হাতের তালু হাতের তালুর সঙ্গে মিলিত করা। (আল কামুসুল মুহিত : ১/৯২)। ইবনে মানজুরের মতে, মুসাফাহা হলো, হাত মিলিত করা। (লিসানুল আরব : ২/৫১২)
শরিয়ত মতে, মুসাফাহা হলো পরস্পর দুই হাত মেলানো। ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর সুবিখ্যাত হাদিসগ্রন্থে একটি অধ্যায়ের শিরোনাম করেছেন ‘বাবুল আখজি বিল ইয়াদাইন’। অর্থাৎ ‘উভয় হাত মেলানো সম্পর্কে অধ্যায়।’ (সহিহ বুখারি : ৫/২৩১১, হাদিস নম্বর : ৫৯০৯)
এ কথা লেখার পর তিনি উল্লেখ করেছেন যে হাম্মাদ বিন জায়েদ (রহ.) ইবনে মোবারক (রহ.)-এর সঙ্গে উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন। এর মাধ্যমে জানা যায়, দুই হাতে মুসাফাহা করা সুন্নত। উভয় হাতে মুসাফাহা সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে পূর্ণ সনদসহ বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তাশাহুদ শিখিয়েছেন। এমতাবস্থায় আমার হাত তাঁর উভয় হাতের মাঝামাঝি ছিল। (সহিহ বুখারি : ২/৯২৬, হাদিস : ৫৯১০, সহিহ মুসলিম : ১/১৭৩, সুনানে নাসায়ি : ১/১৭৫)
তবে মনে রাখতে হবে, মুসাফাহা করার পর হাত চুম্বন করা মাকরুহে তাহরিমি (নিষিদ্ধ পর্যায়ের অপছন্দনীয় কাজ)। একই বিধান বুকে লাগানোর। অর্থাৎ মুসাফাহা করে বুকে হাত লাগানো যাবে না। কেননা এসবের কোনো প্রমাণ নেই। তাই এসব পরিত্যাজ্য। এ বিষয়ে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় এসেছে : ‘অজ্ঞরা যা করে থাকে যেমন—অন্যের সঙ্গে সাাতের সময় হাতে চুমু খায়, এটা মাকরুহ। এ বিষয়ে সবাই একমত।’ (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ৫/৩৬৯)
কিন্তু মুসাফাহা করার পর এমনিতেই যদি হাত বুকের সঙ্গে লাগায় এবং এটাকে সওয়াবের কাজ বা সুন্নত মনে না করে, তাহলে এটি বিদআত হবে না এবং হারাম বা নাজায়েজ হবে না। তবে যদি সওয়াবের কাজ মনে করে বা সুন্নত মনে করে কিংবা এটিকে মুসাফাহাসংশ্লিষ্ট সুন্নত মনে করে, তাহলে তা বিদআত হবে।
 লেখক : আলেম ও লেখক