শাওয়ালের ৬ রোজা পালন হলো রমজানের রোজা ও ইবাদত কবুলের অন্যতম নিদর্শন। রমজানের রোজা ও আমলের ভুল-ত্রুটি বা ঘাটতির পরিপূরক হিসেবেও বিবেচিত ৬ রোজা। হাদিসে পাকে শাওয়ালের ৬ রোজার উপকারিতা ও আমল কবুলের নিদর্শন ও ঘাটতি পূরণ সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।
> বছরজুড়ে রোজা রাখার ঘাটতি পূরণবছরজুড়ে রোজা রাখার সাওয়াব মেলে ৬ রোজায়। শুধু রমজানের রোজা পালন করলে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব হবে না। এ ঘাটতি পূরণে শাওয়ালের ৬ রোজা রাখার বিকল্প নেই। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
- প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি রমজানের রোজা রাখল এরপর শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখল; সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।’ (মুসলিম)
- ‘আল্লাহ তাআলা একটি নেকিকে ১০গুণ করে দেন সুতরাং (রমজানের) এক মাসের রোজা দশ মাসের রোজার সমান। আর বাকি (শাওয়ালের) ৬ দিন রোজা রাখলে এক বছর হয়ে গেল।’ (নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
> আমলের ঘাটতির পরিপূরক
শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রমজানের ফরজ রোজা ও আমলের ঘাটতির পরিপূরক। তাছাড়া শাওয়াল ও শাবান মাসের নফল রোজা সুন্নাত নামাজের মতো। তাহলো এই যে-
‘ফরজ নামাজের আগে ও পরের সুন্নাত নামাজ যেভাবে ফরজের ভুল-ত্রুটি ও অবহেলায় সৃষ্ট ঘাটতির দূর করে দেয়; তেমনি শাওয়াল ও শাবান মাসের নফল রোজা রমজানের ফরজ রোজার ঘাটতি পূরণ করে দেয়। কেননা নফল ইবাদত-বন্দেগি ফরজ ইবাদতের ঘাটতি পূরণ করে দেয়।
> আমল কবুলের নিদর্শনরমজানের ইবাদত কবুলের নিদর্শন শাওয়াল মাসের ৬ রোজা। এ রোজাগুলো রাখলে মনে এ প্রশান্তি আসে যে, আল্লাহ তাআলা রমজানের ফরজ রোজা কবুল করেছেন। কেননা আল্লাহ তাআরা যেসব বান্দাহর ইবাদত কবুল করেন তাকে আরও বেশি আমল করার তাওফিক দান করেন। অনেক সালাফ থেকে বর্ণিত আছে যে-
‘নেক কাজের পর আরেকটি নেক কাজ করার অর্থ হলো আগের (প্রথম) নেক কাজ কবুল হওয়ার আলামাত।’
> দান-সাদকার ঘাটতি পূরণদান-সাদকার ঘাটতির পরিপূরক রোজা। হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন-
من لم يجد يتصدق به فيصم
‘যে ব্যক্তি (গরিব-অসহায়কে) দান-সাদাকা করার সামর্থ রাখে না; সে যেন রোজা রাখে।’
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শাওয়ালের ৬টি রোজা পালনের মাধ্যমে রমজানের ইবাদত-বন্দেগির ঘাটতিগুলো পূরণে এগিয়ে আসা। বছরজুড়ে রোজা পালনের সাওয়াব অর্জন করা। বাকি ১১টি মাস রমজানের শিক্ষা ও আমল নিজেদের মাঝে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।
তবে শাওয়ালের রোজাগুলো ঈদের পরের দিন থেকে রাখা জরুরি মনে করে এ রোজা রাখা থেকে বিরত না থাকা। বরং শাওয়াল মাসজুড়ে রোজাগুলো পালন করে ঘোষিত ফজিলত ও ঘাটতিগুলো পূরণ করে নেয়া জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাওয়ালের ৬ রোজা রাখার মাধ্যমে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত, মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জনের তাওফিক দান করুন। সব ভুল ও আমলের ঘাটতি পূরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।