ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লায় করোনায় মৃতের দাফন নিয়ে গ্রামবাসীর অমানবিক আচরণ
কবরস্থানে বাঁশের বেড়া, ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি মসজিদের খাটিয়া
Published : Tuesday, 25 May, 2021 at 10:05 PM, Update: 25.05.2021 10:30:23 PM
কুমিল্লায় করোনায় মৃতের দাফন নিয়ে গ্রামবাসীর অমানবিক আচরণজহির শান্ত: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর পর দাফন নিয়ে আবারও এক অমানবিক ঘটনা ঘটলো কুমিল্লায়। গ্রামবাসী ওই নারীর লাশ দাফনে বাঁধা দিয়ে কবরস্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে দিয়ে পথ আটকে দেয়। এমনকি ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি মসজিদের খাটিয়াও।

পরে তাদের বাঁধার মুখে বৃষ্টিতে ভিজে ধানক্ষেত মাড়িয়ে এককিলোটির দূরে ওই নারীকে দাফন করে কুমিল্লার মানবিক সংগঠন বিবেকের সদ্যরা। মঙ্গলবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাঘমারা ইউনিয়নের উত্তর মনোহরপুর গ্রামে ঘটে এ অমানবিক ঘটনা।

কুমিল্লায় করোনায় মৃতের দাফন নিয়ে গ্রামবাসীর অমানবিক আচরণজানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন সদর দক্ষিণ উপজেলার বাঘমারা ইউনিয়নের উত্তর মনোহরপুর গ্রামের  ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী পারুল বেগম (৫৫)। তার মারা যাওয়ার খবর শুনে গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি লাশ যেনো এলাকার কবরস্থানে দাফন করতে না পারে এজন্য কবরস্থানে প্রবেশ পথে নতুন করে বেড়া দিয়ে তালা মেরে পাহাড়া বসায় । এই অবস্থায় মরহুমার স্বজনরা তার লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যেতে চান।

বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সেখানে অবস্থানরত এক ব্যক্তি মোবাইলফোনে বিস্তারিত "বিবেক" এর প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপুকে জানান। সবকিছু জেনে বিবেকের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মরদেহ সংগ্রহ করে মরহুমার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। তারা নানাভাবে গ্রামবাসীকে দাফনের জন্য অনুরোধ করেও মন গলাতে পারেননি।

এমনকি মসজিদ কমিটির লোকজন খাটিয়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেয়নি! উপায়ন্তর না দেখে বৃষ্টি ভেজা মেঠোপথ ও ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার মরদেহ বহন করে কবরস্থানে মরহুমাকে কবরস্থ করা হয়।

কুমিল্লায় করোনায় মৃতের দাফন নিয়ে গ্রামবাসীর অমানবিক আচরণএ বিষয়ে জানতে চাইলে মানবিক সংগঠন বিবেক এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, করোনাকালের প্রথম দিকে আমরা এমন অসংখ্য অমানবিক ঘটনার সাক্ষি হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ধাপে এসে তেমনটা আর হয়নি। কিন্তু গতকাল যা ঘটে গেলো- তা সত্যি অমানবিক, মানবতাবিবর্জিত।

তিনি বলেন, আমরা গ্রামের কথিত হোমরাচোমরাদের কিছু বলবো না ;শুধু মহান রাব্বুল আল-আমিনের নিকট দোয়া করি, যেন যারা আজ এই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন তাদের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়। ভবিষ্যতে করোনায় মৃতের দাফন নিয়ে যেনো এমনটি আর না হয়। আমরা যেনো একে-অন্যের প্রতি আন্তরিক হই।