ব্রাহ্মণপাড়ায় শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে নৈশ প্রহরী গ্রেপ্তার
Published : Wednesday, 26 May, 2021 at 12:00 AM
ইসমাইল নয়ন ॥ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া কওমী মাদ্রাসার এক শিশু শিক্ষার্থীকে পাকা কাঠাল দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় একটি কলেজের ভিতরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে কলেজের নৈশ প্রহরী ৬৫ বছর বয়সী জজু মিয়ার বিরুদ্ধে। গত সোমবার (২৪ মে) সকালে এ ঘটনায় ঘটেছে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই কলেজের নৈশ প্রহরী জজু মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং একই দিন রাতে ব্রাহ্মণপাড়া পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই নৈশ প্রহরী জজু মিয়াকে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্যাট আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। এ দিকে ধর্ষনের শিকার হওয়া ওই শিশুটিকে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং পরীক্ষা শেষে কুমিল্লা জেলা নারী ও শিশু আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
ধর্ষক জজু মিয়া (৬৫) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্পবাস গ্রামের মৃত আয়াত আলীর ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণপাড়া আবদুল মতিন খসরু মহিলা কলেজের নৈশ প্রহরি পদে চাকুরী করেন।
মামলার এজহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ বছর বয়সী ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি কওমী মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। একই এলাকার নৈশ প্রহরী জজু মিয়া প্রায়ই ওই ছাত্রীকে বিস্কুট, কলা ও চকলেট কিনে দিতে চাইতেন। গত সোমবার (২৪ মে) সকালে ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নৈশ প্রহরী জজু মিয়া শিশুটিকে ডেকে নেয়। তাকে কলেজের ভিতরে গাছ থেকে একটি পাকা কাঠাল নেওয়ার জন্য বললে সে রাজি হয়। পরে তাকে তার কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষণের পর শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে।
শিশুটির পরিবার তাকে খুজঁতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই এলাকার এক ব্যক্তি কলেজের ভিতরে নৈশ প্রহরির কক্ষে অচেতন অবস্থায় তাকে খুজে পায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন কলেজের ভিতর থেকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন। এদিকে কলেজের নৈশ পহরী জজু মিয়া পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে জজু মিয়ার বিরুদ্ধে ওই দিন রাতে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। পরে একই দিন রাতে পুলিশ ব্রাহ্মণপাড়া এলাকা থেকে জজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
এছাড়াও মঙ্গলবার সকালে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং পরীক্ষা শেষে কুমিল্লা জেলা নারী ও শিশু আদালত ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে শিশুটি।
শিশুটির মা বলেন, কলেজের নাইট গার্ড জজু মিয়া প্রায় সময় আমার মেয়েকে চকলেট, বিস্কুট ও কলা কিনে দিতে চাইতেন। ঘটনার দিন তাকে গাছের পাকা কাঠাল দেওয়ার কথা বলে কলেজের ভিতরে নিয়ে ধর্ষণের করেছেন নাইট গার্ড জজু মিয়া।
এব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, শিশুটিকে পাকা কাঠাল দেওয়ার কথা বলে কলেজের ভিতরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ধর্ষক কলেজের নৈশ পহরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষনের শিকার হওয়া শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।