রাজধানীর পল্লবী এলাকায় সন্তানের সামনে শাহীন উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা মামলার পলাতক আসামি বাবু ওরফে কালা বাবু ওরফে কালু ওরফে শেখ রাসেল হোসেনকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (অপস) সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পল্লবীতে প্রকাশ্যে শাহীন উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি ঘটনাটির মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-৪। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মামলার ১৮ নম্বর এজাহার নামীয় আসামি বাবু ওরফে কালা বাবু ওরফে কালুকে গ্রেফতার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিসহ হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় হত্যা ছাড়াও চাঁদাবাজি, মারামারি ও মাদক মামলা রয়েছে।’
গ্রেফতার আসামিকে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের ৩১ নম্বর রোডে সাত বছরের সন্তানের সামনে শাহীন উদ্দিনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পরদিন পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে। এরপর গত ২০ মে এ ঘটনায় সাবেকে এমপি এম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করে র্যাব। চার দিনের রিমান্ড শেষে তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ মে বিকেল ৪টায় সুমন ও টিটু নামে দুই যুবক শাহীন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানোর কথা বলে ফোন করে ডেকে নেন। শাহীন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে পৌঁছলে সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যান। এ সময় শাহীনের সাত বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে তাকে চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই বাড়ি থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে ফের কুপিয়ে সেখানে ফেলে রেখে চলে যান তারা।
নিহতের মা আকলিমা বেগমের অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা শাহীনকে হত্যা করেন। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় খুন হতে হয় তাকে।