ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারে পূর্ব সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে একে একে চারটি মৃত ও একটি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের ১৯টি জেটি, ১০টি অফিস, চারটি জলোযান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি নিরূপণে চারটি কমিটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বনের দুর্গম এলাকায় সবার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিকভাবে যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে চারটি মৃত ও একটি জীবিত হরিণ উদ্ধার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব বনবিভাগের ১৯টি জেটি, ৯টি পুকুর, ১০ অফিস ও স্টেশনে টিনের চালা উড়ে গেছে, ভেঙে গেছে দুটি টাওয়ার, ২৪টি পাটাতনের রাস্তা ও নষ্ট হয়েছে ছয়টি জলযান।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণে বনবিভাগ চারটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত বনবিভাগের চারটি রেঞ্জ এলাকা। যার দুটি বাগেরহাটে অবস্থিত।
ইতোমধ্যে সুন্দরবনের পূর্ব বনবিভাগের অন্তর্গত শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের ক্ষতি নিরূপণে কাজ শুরু করেছেন কমিটির কর্মকর্তারা। সুন্দরবনের খুলনা জেলার নলিয়ান ও সাতক্ষীরা জেলার বুড়িগোয়ালিনী রেঞ্জেও একইভাবে সেখানকার ক্ষতি নিরূপণে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বনের অনেক এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে দুপুরে জোয়ারের সময়ে আবারও পানিবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
পূর্ণিমার জোয়ার ও বাতাসের গতিবেগ থাকায় বনসংলগ্ন নদী-খাল পরিপূর্ণ রয়েছে। তবে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী কেন্দ্রের কুমির, হরিণ ও কচ্ছপ নিরাপদে রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে তিন নম্বর সংকেত জারি করা হয়। ঝড়ো হওয়া ও জলোচ্ছ্বাস স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় পানি সুন্দরবন প্লাবিত করে। ফলে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।