লক্ষ্মীপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে শাহিনুর আক্তার শানু নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৪ জুন) বিকেল ৩ টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই গৃহবধূ।
এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পৌর শহরের উত্তর বাঞ্চানগর এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে তাকে নির্যাতন করা হয়। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে তার স্বামী হান্নান ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
নিহত শাহিনুরের পরিবার ও পুলিশ জানায়, ৫ বছর পূর্বে পৌর শহরের উত্তর বাঞ্চানগর এলাকার দুলাল মিয়ার মেয়ে শাহিনুর আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে সিএনজি অটোরিক্সা চালক হান্নানের বিয়ে হয়। সম্প্রতি শাহিনুরের স্বামী ও শ্বশুর পক্ষের লোকজন হান্নানকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। কিন্তু পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন শাহিনুর ও তার পরিবার। এ নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে হান্নান তাকে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। এসময় ঘটনাস্থল থেকে প্রতিবেশীরা তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান ওই গৃহবধূ। এদিকে এ ঘটনা জানাজানির পর হাসপাতালে ছুটে যায় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামীসহ শ্বশুর পক্ষের লোকজন।
এদিকে হাসপাতালে নিহত শাহিনুরের বাবা দুলাল মিয়া ও চাচাতো ভাই জামাল হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি শাহিনুরের স্বামী হান্নানকে বিদেশ পাঠানোর জন্য তারা ( শাহিনুরের পরিবার) ১ লাখ টাকা যোতুক দাবি করে আসছিল। তা দিতে না পারায় নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তারা।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, নিহত শাহিনুরের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
এ ব্যাপারে দায়িত্বরত শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল মতিন জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।