কার্ড ও ইনজুরি সমস্যায় জর্জরিত জাতীয় ফুটবল দল, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ওমানের বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না অধিনায়ক জামালসহ চারজন
এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এমনিতেই চোটের কারণে ফিফা বিশ^কাপ বাছাই ও এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই মিশন শেষ হয়ে গেছে দলের নির্ভরযোগ্য দুই ফুটবলারের। তার ওপর যোগ হয়েছে আরও তিন ফুটবলারের কার্ডজনিত শাস্তি সমস্যা! এ নিয়ে মহাসমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। কাতারের দোহায় আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মোকাবেলা করবে ওমানকে। সেই ম্যাচে কার্ডজনিত সমস্যায় খেলতে পারবেন না বাংলাদেশের তিন ফুটবলার। তারা হলেন : অধিনায়ক-ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়া, লেফট ব্যাক রহমত মিয়া লেফট উইঙ্গার বিপলু আহমেদ। শুধু তাই নয়, ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন আরেক মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনি এবং আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে চোট পেয়ে বিশ^কাপ মিশন শেষ হয়ে গেছে আরেক মিডফিল্ডার সোহেল রানারও। সবমিলিয়ে এখন দারুণ ঝামেলায় পড়েছে লাল-সবুজ বাহিনী। এখন কোচ জেমি ডের তো একাদশ সাজানোই কঠিন হয়ে গেল। বুধবার জাতীয় দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘কাতারে প্রথম ম্যাচে ব্যথা পেয়ে দেশে ফিরে গেছেন সোহেল রানা। গত ম্যাচে জনি ব্যথা পেয়েছে। এরই মধ্যে তার এমআরআই পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাকে ডাক্তার দু’সপ্তাহ বিশ্রাম দিয়েছে। আগামী ম্যাচে তাকেও হয়তো আমরা মিস করব। ফিফা রেগুলেশন অনুযায়ী দু’টি কার্ডের জন্য আগামী ম্যাচে জামাল ভুঁইয়া, রহমত মিয়া ও বিপলুকেও পাচ্ছি না। এছাড়া দলের বাকি সবাই সুস্থ আছে। ইনশাআল্লাহ আগামী ম্যাচে তাদের নিয়ে ওমানের বিপক্ষে আমরা লড়াই করব।’ নিষেধাজ্ঞায় ও ইনজুরিতে তিন গোলরক্ষক ছাড়া কোচ ডের হাতে এখন আছেন ১৭ খেলোয়াড়! ওমানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিষেধাজ্ঞা ও চোট দেখে জেমি ভীষণ চিন্তিত, ‘আমার হাতে গোলরক্ষক ছাড়া ১৭ খেলোয়াড় আছে। অধিনায়ক জামাল ছাড়াও আরও দুজন সাসপেনশনের কারণে ওমান ম্যাচে খেলতে পারবে না। ফিফা থেকে চিঠি এসেছে। এখন যারা আছে তাদের নিয়েই মাঠে নামতে হবে। এছাড়া কিছু করার নেই।’
১৫ জুন ওমানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ বাংলাদেশের। যারা খেলতে পারবেন না, তাদের দেশে না পাঠিয়ে দলের সঙ্গেই রেখে দেয়া হচ্ছে। কোচ এই তিনজনকে রেখে দিচ্ছেন অনুশীলনে সহায়তার জন্য। জামাল ছিটকে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব কে করবেন, এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওমানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে আর্মব্যান্ড তুলে দেয়া হবে ডিফেন্ডার তপু বর্মণের হাতে। ভারত ম্যাচের পর মঙ্গলবার সম্পূর্ণ বিশ্রামে ছিলেন ফুটবলাররা। বুধবার সকালে জিমে ঘাম ঝরিয়েছেন জেমির শিষ্যরা। এরপর বিকেলে অনুশীলন করেন ফুটবলাররা। আজও একইভাবে জিম ও অনুশীলন করবেন তারা। তবে মাঠে না থাকতে পারলেও সতীর্থদের উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে থাকবেন বাদ পড়া ফুটবলাররা।
বুধবার মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদ জানান, ‘কার্ডজনিত সমস্যায় আমরা বেশ কজন আগামী ম্যাচটা খেলতে পারব না। তবে ম্যাচ না খেললেও আমরা একসঙ্গে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বাকি যে ফুটবলাররা আছেন, তারা অবশ্যই এই সুযোগটা কাজে লাগাবেন এবং তাদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করবে ওমান ম্যাচে। আর আমরাও গ্যালারিতে থেকে তাদের উৎসাহ দেবো ইনশাআল্লাহ।’
মিডফিল্ডার রিয়াদুল হাসান রাফি বলেন, ‘গত ম্যাচে আমরা ভারতের কাছে হেরে যাওয়াতে সবারই মন খারাপ। আশা ছিল পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোল খাওয়াতে সেটা সম্ভব হয়নি। যেটা চলে গেছে সেটা চাইলেও তো আর ফিরে আসবে না। আমাদের শেষ ম্যাচ ওমানের বিপক্ষে। আমরা চেষ্টা করব ভালো খেলা উপহার দিতে।