সিলেটের গোয়াইনঘাটে মা ও তার দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন সিলেটের ডিআইজিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনার তদন্তে মাঠে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় পারিবারিক বিরোধ দেখছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাতের কোনও একসময় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের। বুধবার (১৬ জুন) সকালে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য জন্য লাশগুলো সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলেন বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলেয়া বেগম (২৭), ছেলে মিজান আহমদ (১১) ও মেয়ে তানিসা (৫)। আহত অবস্থায় হিফজুর রহমানকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার এখনও জ্ঞান ফেরেনি।
হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সিলেটের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আশিকুর রহমান, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান, গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, গোয়াইনঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদ, জৈন্তাপুর থানার ওসি গোলাম দস্তগীর, পরিদর্শক ফারুক আহমেদ, পরিদর্শক (তদন্ত) দীলিপ কান্ত নাথ, ডিবির ওসি মো. সাইফুল ইসলামসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে যান। বর্তমানে তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
এরই মধ্যে হিফজুর রহমানের মামা ও কয়েকজন আত্মীয়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, জমি সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
সিলেটের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনার তদন্ত করছে। কয়েকটি বিষয় মাথায় নিয়ে তদন্তকাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।
তিনি বলেন, হিফজুর যে ঘরে থাকতেন সেটি তার মায়ের সম্পত্তি থেকে পাওয়া। পাশের দুটি ঘরে তার মামারা থাকেন। হিফজুর দিনমজুরের কাজ করেন। তার মামা ও আত্মীয়দের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশ কয়েকটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে জমি সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধ অন্যতম। সেই সঙ্গে হিফজুর পুলিশের পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার জ্ঞান ফেরেনি। জ্ঞান ফেরার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশু দুটির গলা কেটে ফেলা হয়েছে। আলেয়া বেগমের বুকে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। হিফজুরের শরীরের একাধিক স্থানে অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক বিরোধে এ ঘটনা ঘটেছে।