চীনের উপহার হিসেবে আসা সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ টিকার মধ্যে প্রথমে ৫ লাখ দেওয়া হবে; বাকি টিকা দ্বিতীয় ডোজের জন্য রেখে দেওয়া হবে। যারা টিকার জন্য আগে নিবন্ধন করেছেন, কিন্তু এখনো পাননি, তাদেরকে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে’ এবার টিকা দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।
বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী, বিদেশগামী কর্মী, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছনতাকর্মী এবং কোভিডে মৃতদের সৎকারে নিয়োজিত কর্মীরাও টিকা পাবেন।
“বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিক এবং অন্য দেশের যে নাগরিকরা বাংলাদেশে কাজ করছেন, তারাও আবেদন করেছেন, তাদেরকেও আমরা দিয়ে যাচ্ছি।”
টিকা কেনার ব্যাপারে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা একটি ‘সমঝোতার পর্যায়ে’ পৌঁছেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে শিগগিরই ‘ইতিবাচক খবর’ আসতে পারে।
“আমরা মোটামুটি একটি সমঝোতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। এখন আমরা অপেক্ষা করছি, তারা কবে কখন কতটুকু দেবে।”
সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি আগামী ১৯ জুন থেকে আবার শুরু হবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে দেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
সেখান থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও মার্চ থেকে টিকা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারত। ফলে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা হাতে পেয়েছে।
পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও সরকারের হাতে নেই।
কোভ্যাক্স থেকে শিগগিরই ১০ লাখের বেশি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হলেও তার দিন তারিখ এখনও ঠিক হয়নি।
এদিকে সঙ্কট মেটাতে এপ্রিলের শেষে অন্যান্য উৎস থেকে টিকা আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। কোভিশিল্ড ছাড়াও আরও চারটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে। আর আর চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় এসেছে সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা।
সিনোফার্মের কাছ থেকে সরকারি পর্যায়ে দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কেনার একটি প্রস্তাব সরকার ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে ওই টিকা বাংলাদেশ পাবে বলে সরকার আশা করছে।