নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী রেজাউল করিমকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে থাকার পর শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে দেশে প্রবেশের সময় কুমিল্লার সীমান্তবর্তী কেরানীনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিজিবি। এসময় তার কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ ভারতীয় তিনটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। পরে শনিবার  বিকালে রেজাউলকে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয় ।
শীর্ষ সন্ত্রাসী রেজাউল কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের আঃ রাজ্জাকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১২টি হত্যা মামলাসহ মোট ৩০টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে সে ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান নিয়ে গোপনে বাংলাদেশে এসে হত্যা-ধর্ষণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আবার ভারতে পালিয়ে যেতো। ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হত্যাকাণ্ডের পরও রেজাউল তার সহযোগীদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিজিবি।
২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরদিন নিহতের বড় ভাই শাহাদাৎ হোসেন নয়ন সদর দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় রেজাউলকে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।
১০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউন রহমান জানান শুক্রবার গভীর রাতে ১০ বিজিবি’র অধীনস্থ গোলাবাড়ী পোষ্টের একটি বিশেষ টহলদল গোপন সংবাদের সীমান্তের ১০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কেরানী গর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। এসময় রেজাউলের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ তল্লাশি করে ১টি ৩২ বোর রিভলভার, ম্যাগাজিনসহ ৪টি গুলি, ১৬ পিস ইয়াবা, এক প্যাকেট নতুন ধরনের ভারতীয় ‘কৌটা মাদক’, ভারতীয় ৩টি পরিচয়পত্র, ভারতীয় ইউসিবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ২টি, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার ৭টি কার্ড, বাংলাদেশী নগদ টাকা ৭৮৫ টাকা এবং কাতারের ১০ দিরহাম উদ্ধার করা হয়। রেজাউর রহমান জানান, সন্ত্রাসী রেজাউল করিম অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করে গোপনে বাংলাদেশে এসে হত্যা, রাহাজানি এবং ধর্ষনের মতো নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক হত্যা মামলাসহ অন্যান্য প্রায় ৩০টি মামলা চলমান রয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে অভিযানের সময় বিষয়টি টের পেয়ে সে পুনরায় ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে এবার আর পালাতে পারেনি।
কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, শনিবার বিকেলে রেজাউলকে থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি। কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিজিবির মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। মামলা শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।