কুমিল্লায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ৬৪ জন। এর মধ্যে ৩৩ জনই কুমিল্লা সিটি এলাকার। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আরো একজনসহ জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৫৭ জন। গত একদিনে জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৩৭ জন। কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এর প্রকাশিত তথ্যে এসব পরিসংখ্যান জানা গেছে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও জেলা জুড়েই স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক অসচেতনতা লক্ষ্য করা গেছে। সরকারিভাবে রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী ৭টি জেলাকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, কুমিল্লা এসব জেলার কাছাকাছি হলেও এখনো এখানে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে মানুষের অবহেলার শেষ নেই। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জেলায় করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা কমলেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগতই বাড়ছে। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে না সে অনুপাতে। চিকিৎসকদের ধারনা, অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজেরাই এখন নিজেদের চিকিৎসা শুরু করে দিয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম মুকতাদির চৌধুরী জানান, যে পরিমানে সংক্রমনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সে পরিমান রোগী হাসপাতালে আসছে না। যারা আসছে তারা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আর টিকতে না পেরে আসছে হাসপাতালে। যারা আসছে তারা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। তবে সংক্রমণ কমানোর বিষয়ে আমাদের আরো বেশি সচেষ্ট হওয়া জরুরি। মানুষের মাঝে করোনা নিয়ে ভয় কমে যাওয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে।
সংক্রমণ ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান, কুমিল্লায় যে করোনার সংক্রমণ উদ্ধমুখী এটা নিয়ে কোন অনিশ্চয়তা নাই। এখন যে হার পাওয়া যাচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে করোনা ভাইরাস কুমিল্লা খুব দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। যে পরিমান পরীক্ষা হচ্ছে তার চেয়ে যদি বেশি পরীক্ষা করা হত তাহলে হয় তো আরো বেশি সংক্রমণ শনাক্তে হার পাওয়া যেত। কিন্তু যে বিষয়টি সাধারণ মানুষের খেয়াল রাখতে হবে - কমিউিনিটি ট্রান্সমিশনের বেগ যদি বাড়ে তাহলে তা ভয়ানক রূপ নিবে। তাই সংক্রমণ রোধে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কুমিল্লায় ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা থেকে নানান সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা জুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে পরিচালনা করা হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, কুমিল্লা জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল অফিসে নো মাস্ক নো সার্ভিস বাধ্যতামূলক করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ইমামদের মাধ্যমে মসজিদে মাস্ক ব্যবহার সচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্য কর্মকর্তার মাধ্য জেলার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং ও টীকা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।