করোনা পরিস্থিতিতে দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি নিয়োগ পরীক্ষা। এ অবস্থায় অনেকের বয়স শেষ হওয়ার পথে। বয়স বাড়ানোর দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এ অবস্থায় আরেকটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
জানা গেছে, মূলত চাকরিপ্রার্থীরা যাতে তাদের ৩০ বছরের বয়সসীমার মধ্যেই আবেদন করতে পারেন সেটি বিবেচনায় রেখে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এতে বয়সসীমা শিথিল করা হতে পারে। অর্থাৎ যাদের সম্প্রতি বয়স শেষ হয়েছে তারাও এতে আবেদনের সুযোগ পেতে পারেন। তবে কত সময় বিবেচনা করা হবে, সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।
পিএসসির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে চারটি বিসিএস নিয়ে কাজ চলছে। ৩৮ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ কার্যক্রম, ৪০ এর ভাইভা, ৪১ এর প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ ও ৪৩ এর আবেদন প্রক্রিয়া। এর মধ্যে ৩৯ ও ৪২তম বিশেষ বিসিএসে শুধু ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মূলত প্রার্থীদের যাদের বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতিতে যারা বিজ্ঞপ্তি পাননি তাদের কথা বিবেচনায় রেখে ৪৩তম বিসিএস’র আবেদন শেষ হওয়ার পর পরই ৪৪ এর বিজ্ঞপ্তি দেয়ারও চিন্তা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘নরমালি বছরে একটা অন্তত বিসিএস পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা নিয়ে আমরা এগুচ্ছি। বর্তমানে ৪৩ এর আবেদন চলছে। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে কয়েক দফা আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চাহিদা পেলে অক্টোবর মাস নাগাদ ৪৪তম বিসিএসেরও বিজ্ঞপ্তি দেয়ার চিন্তা আছে।’
৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি মাসে ৪৩তম বিসিএসের আবেদন কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। এটি বাড়ানোর আর কোনো চিন্তা নেই। বর্তমানে আমরা ৪৪তম বিসিএসের জন্য কাজ শুরু করেছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চাহিদা তৈরি করছে। চাহিদা পেলে এ বিসিএসের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান।
৪৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের জন্য বিশেষ হবে নাকি সাধারণ বিসিএস হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো কিছু ঠিক হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে কী পরিমাণ চাহিদা দেয়া হয় সেটার আলোকে বিজ্ঞপ্তি হবে।’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) শাহেদুল খবির বলেন, গত ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষার জন্য শূন্যপদের চাহিদা অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এখনো শূন্যপদ সৃজন হয়নি। সে হিসেবে ৪৪তম বিসিএসে শিক্ষার জন্য বিশেষ নেয়ার সম্ভাবনা নেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে প্রথম শ্রেণির শূন্যপদের চাহিদা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। প্রায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে চাহিদা পাওয়া গেছে। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের চাহিদা বাকি আছে। সেগুলো পাওয়ার পর সবকটি যোগ করে সমপরিমাণ ক্যাডার নিয়োগ দিতে পিএসসিকে নির্দেশনা দেবে মন্ত্রণালয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই মাসের মধ্যে শূন্যপদের চাহিদা পিএসসির কাছে পাঠানো সম্ভব হবে। এরপর পিএসসি সেগুলো প্রক্রিয়া করে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে। এর আগে বিশেষ কোনো বিসিএস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বর্তমানে ৪৩তম সাধারণ বিসিএসের আবেদন চলছে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়। কয়েক দফা বাড়িয়ে আবেদনের তারিখ ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ অক্টোবর।