এবিএম
আতিকুর রহমান বাশার ঃ
দেবীদ্বারে একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির রান্নাঘরের দরজায়
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১০দিনে ৭টি গুইঁসাপের মৃত্যু হয়েছে। রান্না ঘরের দরজার
সামনে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ধোঁয়ার মতো গ্যাস বের হওয়া স্থানে এসকল
গুইঁসাপের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি ঘটে
উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেগমাবাদ গ্রামের প্রয়াত
ক্ষিতিশ পোদ্দারের বাড়ির দিলীপ সাহার পরিত্যাক্ত রান্নাঘরে।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন যাবত ওই স্থানটিতে থেমে থেমে ধোঁয়ার মতো গ্যাস বের হতে দেখা যায়, এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদ
পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে যেয়ে নারী-পুরুষসহ নানা বয়সী বিপুল সংখ্যক
উৎসুক জনতার উপস্থিতি দেখা যায়। সবার দৃষ্টি ওই পরিত্যাক্ত ঘরের কোনে যেখান
থেকে ধোঁয়া উড়ছে। মৃত্যুর কারন কেউ বলতে পারছেননা।
সকােেল ওই গ্রামের
সপ্তম শ্রেণীতে পড়–য়া চন্দন শীল নামে এক সাহসী কিশোর মুখে মাক্স এবং হাতে
পলিথিন প্যাচিয়ে রশি বোথে ঘটনাস্থল থেকে গুঁইসাপটি সরিয়ে নেয় এবং একটি
বাঁশের সাহায্যে ওই ধোঁয়া বের হওয়া স্থানের মাটি খুরতে যেয়ে বৈদ্যুতিক শক
অনুভব করে, তখনই বুঝা গেল মাটির নিচে কোন কারনে বিদ্যুৎবাহী তার লোকিয়ে
আছে। বৃষ্টির কারনে মাটির সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকায় গুঁইসাপগুলো ওই স্থান
দিয়ে চলাচল করতে যেয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হযে মারা যাচ্ছে।
সংবাদ পেয়ে
বিদ্যুৎ কর্মী গোলাম আজম ও রুবেল মিয়া ঘটনাস্থলে আসেন। তারা জানান, বাশঁটি
বৃষ্টিতে ভিজা ছিল, তাই আর্থিং করেছে। গুঁইসাপ বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে মরার কথা
নয়, তবে জিহ্বার সাহয্যে গন্ধ নেয়ার সময় হয়তো বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা ঘটেছে।
এ বাড়ির ওয়েরিং এ সমস্যা আছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে মেরামত না করলে আরো
বড়ধরনের দূর্ঘনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
ওই এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক
সুজিৎ পোদ্দার জানান, আমাদের এ এলাকায় কয়েকশত গুঁই সাপ আছে। যেগুলো আমাদের
ক্ষতি করেনা, বরং এই গুঁইসাপগুলো বিষাক্ত সাপ থেকে আমাদের নিরাপত্তার কাজে
সহযোগীতা করে।
ইলা সাহা ও ভানুবালা সাহা জানান, এ বাড়িতে প্রায় দুইশত
বছরের পুরনো পরিত্যাক্ত ভবন সহ বেশ কয়েকটি ঘর পরিত্যাক্ত রয়েছে। ওই
ঘরগুলোতে কেউ বসবাস করেনা। ফলে বাড়ির অধিকাংশ জায়গা ঝোঁপঝারে ভরপুর, এসকল
ঝোঁপঝার এবং পরিত্যাক্ত ভবন ও ঘরে গুইঁসাপগুলোর বিচরন এবং বসবাস করে আসছে।
যাদের কারনে আমরা বিষাক্ত সাপের ছোবল থেকে রক্ষা পেয়ে আসছি।
সোমা রানী
সাহা জানান, কিছুদিন যাবত প্রায় প্রতিদিনই একটি দু’টি করে গুইঁসাপ মরছে।
গুঁইসাপগুলোকে যেখানে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে, বেশ কয়েকটি গুইঁসাপ
দলবদ্ধভাবে ওই স্থানটির মাটি খুড়ে মৃত গুইঁসাপগুলি তুলে নেয়ার চেষ্টাকরে,
তাই মাটিচাপা দেয়া স্থানটিতে টিন ও পাথরচাপা দিয়ে রেখেছি।
রতন পোদ্দার,
সুজন সাহা ও অনব পোদ্দার জানান, সংবাদ পেয়ে জাফরগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের
লোকজন আসেন, বাড়ির মালিক দিলীপ সাহার অনুমতি না পাওয়ায় ঘরের তালা ভেঙ্গে
মেইন সুইচ অফকরা কিংবা মূল পিলার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যায়নি।
ফলে শুধু গুইসাপই নয়, অসতর্কতায় মানুষের জীবন বিপন্ন হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা
দিয়েছে।