বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য গবেষণা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, এই জন্য ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে—
টিকার ওপরে যাতে গবেষণা হয়, আমাদের দেশে কাজ করতে পারি। আমরা নিজেরাই যাতে
টিকা তৈরি করতে পারি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফার্মাসিটিক্যাল তৈরি করা দরকার।
তার জন্য ইনস্টিটিউট তৈরি করবো। আমরাও যাতে ভবিষ্যতে টিকা তৈরি করতে পারি,
তার জন্য যা যা দরকার ব্যবস্থা নেবো। সেই ধরনের পরিকল্পনাও নিয়েছি।’
বুধবার
(২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায়
তিনি এসব কথা বলেন। ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের
অনুষ্ঠানে তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘করোনাভাইরাসের টিকা যখন গবেষণা পর্যায়ে ছিল, তখন প্রতিটি জায়গায়
যোগাযোগ করেছি, কোথায় পাওয়া যায় টিকা। পৃথিবীর অনেক দেশই টিকা দিতে পারেনি
এখনও। আমরা কিন্তু নিয়ে এসে দেওয়া শুরু করেছি। ভারতে যখন মহামারি আকারে
শুরু হলো, তখন তারা টিকা রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা কিছুটা সমস্যায়
পড়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা আবারও টিকা কেনা শুরু করেছি।’
তিনি
বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে করোনার টিকা যাতে পৌঁছে যায়, তার
ব্যবস্থা আমরা পর্যায়ক্রমে নিচ্ছি। সেটাই আমরা করবো। আমার খুব দুঃখ লাগে
যাদেরকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেভাগে টিকা দিয়েছি, দুই ডোজ নেওয়ার পর
তারা এখন সমালোচনা করেন। অথচ তারাই সবার আগে নিয়েছেন। তাদের আবার বড় বড়
সমালোচনার কথা। একে গালি, ওকে গালি দেন। আমরা শুনি। এটাই অবাক লাগে। কিন্তু
তারা যখন নিয়েছিলেন তখনতো এ কথা বলেননি। এখন আবার সমালোচনা কেন? বিশ্বের
পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘যে টিকা আমরা ৪ ডলারে
কিনেছিলাম, এখন তা ১৫ ডলারে কিনতে হচ্ছে। সামনে হয়তো আরও বেশি দাম হবে।
আমরাতো আগেই টাকা-পয়সা দিয়ে সব চেষ্টাটা করেছিলাম। কিন্তু এটা আন্তর্জাতিক
বিষয়। যারা সমালোচনা করেন, তাদের বলবো— একটু ধৈর্য ধরেন। তারপর দেখেন আমরা
কতটুকু কী করতে পারি। তারপর সমালোচনা করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
‘করোনাভাইরাস আমাদের সকলের জীবনকে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি বোধহয় আমি। এর কারণে আমি না পারি আওয়ামী
লীগের নেতাকর্মী, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। ডিজিটাল বাংলাদেশ
করেছিলাম বলেই আজকে আপনাদের সামনে বসতে পেরেছি। বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার
সুযোগ পাই, বা রাষ্ট্রের কর্মসূচি পালন করার সুযোগ পাই।’
তিনি বলেন,
‘করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট কষ্ট দিচ্ছে। সারাবিশ্বে সমস্যা হচ্ছে। আমরা
একদিকে অর্থনৈতিক গতিটা ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। যদিও এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
তারপরও যে লক্ষ্যটা ছিল সেটা হয়তো পূরণ করতে পারিনি। দক্ষিণ এশিয়ায়
বাংলাদেশই সব থেকে ভালো আছে এবং থাকবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের
উন্নয়ন কোনও ম্যাজিক না। এটা আমাদের পরিকল্পনা, দর্শন ও আদর্শ। আমরা
গ্রামের মানুষকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। যেটা জাতির পিতা চেয়েছিলেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছি বলেই আজকে ধীরে ধীরে উন্নতি লাভ করছি, এগিয়ে
যেতে পারছি।’
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান
গোলাপ গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন— সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া
চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কার্যনির্বাহী সদস্য
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মহিলা
বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ
মন্নাফী, উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।