বাগেরহাট জেলায় সাতদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে এই লকডাউন। প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সাথে দূরপাল্লার পরিবহন, জেলার মধ্যে গণপরিবহন ও নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ গণপরিবহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। জেলা ও উপজেলা সদরে অধিকাংশ দোকানপাট ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাগেরহাট শহর ও উপজেলা সদরে অধিকাংশ চায়ের দোকানসহ মাঝেমধ্যে দুই একটি দোকান খোলা দেখা গেছে।
লকডাউনের প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানার অনীহা দেখা গেছে। সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো থাকলেও সাধারণ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানার আগ্রহ খুবই কম। শহরের প্রধান কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, মৎস্য অবতারণ কেন্দ্র কেবি বাজার কোথাও যেন স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই।
শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোস্ট থাকলেও ভেতরের চিত্র উল্টো। লোকজন মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছে। লাকডাউন কার্যকরে মাঠে রয়েছে ১০টি ভ্রম্যমাণ আদালত। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য শহরে থেকে জেলা তথ্য অফিস ও রেডে ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। কেউ যেন জরুরি কাজ ব্যতীত ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।
এদিকে, জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বিষয়টি প্রাধন্য দিয়ে মোংলা বন্দর এই লকডাইনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। মোংলা বন্দর জেটি ও পশুর চ্যানেলে নোঙর করা জাহাজের নাবিকদের মোংলা বন্দরে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার বাগেরহাটে নতুন করে ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার হার ৩৪ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৪ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩ জন। জেলা সদরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও ৮টি উপজেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৯১ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৬২৭ জন। এই অবস্থায় বাগেরহাট জেলায় করোনা সংক্রামণের হার ৪০ থেকে ৭৩ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করায় বুধবার বিকালে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা মনিটরিং কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ৭ দিনের লকডাউন জারি করেন।