দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বৈরথ ছড়াল না তেমন উত্তাপ। আবাহনীর রক্ষণের ভুলের সুযোগে এগিয়ে যাওয়া মোহামেডান পারল না ব্যবধান ধরে রাখতে। প্রথম লেগের মতো প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় দেখায়ও পয়েন্ট ভাগাভাগি করল দুই দল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার আবাহনী ও মোহামেডানের ম্যাচটি শেষ হয় ১-১ সমতায়। দুই দলের প্রথম লেগের ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছিল।
১৬ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আবাহনী। ২৯ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে মোহামেডান।
চোটের কারণে আক্রমণভাগে নাবীব নেওয়াজ জীবন, সাদ উদ্দিন ও মাঝমাঠে সোহেল রানার অনুপস্থিতি শুরু থেকে আবাহনীকে ভোগাচ্ছিল। কেরভেন্স ফিলস বেলফোর্ট ও সানডে চিজোবায় সাজানো আক্রমণভাগের খেলায় শুরুর দিকে ছিল না প্রত্যাশিত ধারও। একাদশ মিনিট জুয়েল রানার পাস ধরে সানডের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
লিগ ফেরার আগে করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছিল মোহামেডানের তাবুতে। কোচ, খেলোয়াড় ও বলবয় মিলিয়ে ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। আবাহনীর বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি হওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। তবে সব শঙ্কার মেঘ সরে যায় কোচ ও খেলোয়াড়রা ‘নেগেটিভ’ হওয়ায়।
২০তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি পায় মোহামেডান। কিন্তু সুলেমানে দিয়াবাতের পাস ধরে ইয়াসানের দেখে-শুনে নেওয়া শট ফিরে পোস্টে লেগে। একটু পর ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ডের জোরালো শট পাঞ্চ করে ফিরিয়ে আবাহনীর ত্রাতা শহীদুল আলম সোহেল।
সানডে দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করেন ২৪তম মিনিটে। জুয়েলের চিপ ডি-বক্সে খুঁজে পায় তাকে। কড়া পাহারায়ও ছিলেন না নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে বলে পা-ই ছোঁয়াতে পারেননি তিনি।
৩০তম মিনিটে রক্ষণের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় মোহামেডান। দিয়াবাতের লব হেডে ক্লিয়ার করতে লাফিয়ে উঠেছিলেন মাসিহ সাইঘানি, কিন্তু আফগান ডিফেন্ডার নাগাল পাননি। পাশে থাকা ইয়াসিন খানও মার্কিংয়ে রাখেননি ইয়াসানকে। নিখুঁত শটে সোহেলকে অনায়াসে পরাস্ত করেন তিনি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে সমতার স্বস্তি ফিরে প্রিমিয়ার লিগের রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী শিবিরে। মোহামেডানের ডিফেন্ডার কৌলিদিয়াতি ভুল পাসে বল তুলে দেন রাফায়েল সান্তোস দি সিলভার পায়ে। সানডের সঙ্গে একবার বল দেওয়া নেওয়া করে এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের শট উরু নাগাতার পায়ে লাগার পর টোকায় জাল খুঁজে নেন বেলফোর্ট।
৫৫তম মিনিটে দারুণ এক গোল পেতে পারতেন মামুনুল ইসলাম। কিন্তু আবাহনীর এই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারের কর্নার বাঁক খেয়ে দূরের পোস্টে লেগে ফিরে।
বেলফোর্টের ক্রসে জুয়েল পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৭২তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল আবাহনী। কিন্তু বেলফোর্টের হেড পাসে সানডের হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
শেষ দিকে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আবাহনী। পোস্ট ছেড়ে অকারণে বেরিয়ে এসে শঙ্কা বাড়ান মোহামেডান গোলরক্ষক সুজনও। ৮৭তম মিনিটে তিনি মামুনুলের পায়ে বল তুলে দিলে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার নিশ্চিত সুযোগ পেয়ে যায় আবাহনী। তবে, অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের শট সোজা আসায় কোনোমতে ফেরাতে সক্ষম হন সুজন।