গৃহবধূর জুলন্ত লাশ উদ্ধার চারদিনেও মৃত্যুর জট খোলেনি
Published : Friday, 2 July, 2021 at 12:00 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ।।
কুমিল্লার
দেবিদ্বারে চারদিনেও গৃহবধু রেখা আক্তারের মৃত্যু রহস্যের জট খোলেনি। এ
নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। রেখার মৃত্যুর ঘটনায়
দেবিদ্বার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে রেখার পরিবার। বুধবার দুপুরে
ময়নাতদন্ত শেষে রেখাকে তার বাবার বাড়ি বারেরার চর গ্রামে দাফন করা হয়।
জানা
গেছে, গত ২৯ জুন মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের জয়পুর মিয়াজান
বাড়ির স্বামী মো. জামাল হোসেনের বাড়ির রান্না ঘর থেকে রেখা আক্তারের জুলন্ত
লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রেখা আক্তার (২৮) দেবিদ্বার উপজেলার বারেরার চর
এলাকার মো.হারুন মিয়ার মেয়ে এবং জয়পুর গ্রামের মো. জামাল হোসেনের স্ত্রী।
আট বছর আগে পারিবারিকভাবে জামাল ও রেখার বিয়ে হয়। জামাল রেখা দম্পত্তির কোন
সন্তান ছিলো না।
প্রত্যাক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা বলেন, রেখার মৃত্যুর দিন
তার বাবা হারুনুর রশীদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, রেখাকে তার স্বামী জামাল,
স্বামীর বড় ভাই মো. জীবন মিয়া ও ছোট ভাই মো. ইউনুছ হত্যা করে লাশ ঘরের তীরে
ঝুঁলিয়ে রাখে। তবে রেখার লাশ দাফনের পর থেকে রেখার বাবা হারুনুর রশীদ ও
তার পরিবার রহস্যজনক কারণে চুপ থাকছেন। মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে এ
হত্যাকা-টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান একাধিক এলাকাবাসী।
খলিলপুর বেঁড়িবাধের ওপর চা দোকানি ছগির মিয়া বলেন, জয়পুরের মিয়া জান
বাড়ির আশপাশে এর আগেও প্রায় ৭টি হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে। একটির সুষ্ঠু
বিচার হয়নি। মোটা আংকের টাকার বিনিময়ে আপোষ মীমাংসা হয়ে যায়।
এদিকে,
জামাল হোসেনের আপন ভাতিজা আনোয়ার হোসেন ওরফে আনোয়ারুলের ঘটনার দিনের
বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়িয়ে পরে। ওই ভিডিওতে
আনোয়ারুল সাংবাদিকদের বলেন, চার মাস আগে আমার চাচা জামাল হোসেন প্রবাস
থেকে বাড়িতে আসেন। এরপর থেকে চাচী রেখা আক্তার প্রায় চাচাকে বলতো বাবার
বাড়িতে বেড়াতে যেতে, চাচা যেতে রাজী না হওয়ায় এ নিয়ে ঘরে প্রায়ই ঝগড়া হতো
এবং চাচী রেখা আক্তারকে প্রতিদিনই মারধর করতো। গত সোমবার চাচী পুনরায় বাবার
বাড়ি যেতে চাইলে জামাল হোসেনসহ তার ভাই ও আমার বাবা তাকে মেরে গলায় দড়ি
লাগিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখে।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মাহবুর
রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত
শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা
হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে রেখা আত্মহত্যা করেছে। আমরা ঘরের দরজা ভেঙে
লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে এর রহস্য জানা যাবে।
এ
ব্যাপারে ওসি মো.আরিফুর রহমান বলেন, নিহত রেখার বাবা মো. হারুনুর রশিদ ও
ভাই নজরুল ইসলাম থানায় এসে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে গেছেন। এরপরও
ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা জানা যাবে।