জুলাই মাসের শুরুতেই করোনাভাইরাসের ৪৫ লাখ ডোজ টিকা দেশে চলে এসেছে। আশা করা হচ্ছে, এ মাসেই আরো ৫৫ লাখ ডোজ টিকা চলে আসবে। আগস্ট মাসে ভারত থেকেও টিকা আসতে শুরু করবে। অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এক কোটি ডোজ টিকা দেশে আসবে। ফলে ব্যাপক ভিত্তিতে গণটিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে নিতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টিকাদান কর্মসূচি দ্রুততর করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এলাকাভিত্তিক এবং ঘরে ঘরে গিয়ে টিকা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। এসব কারণে আশা করা যায় যে খুব দ্রুত বহু মানুষকে টিকা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা যাবে। এমন পরিপ্রেেিত শনিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যত টাকা লাগে আমরা টিকা কিনব। এর জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শিাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবির পরিপ্রেেিত তিনি বলেন, আমরা শিার্থীদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না, টিকা দেওয়ার পরই শিাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী দুঃখ করে বলেন, গত ঈদুল ফিতরের আগে আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছিলাম নিজ নিজ অবস্থানে থাকার জন্য। অনেকেই সে কথা শোনেননি। গাদাগাদি করে ঢাকা ছেড়েছেন। তার ফল কী হলো, তা তো আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, টিকার জন্য বাজেটে ৩২ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। আরো ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা আছে রিজার্ভে। তিনি জানান, সবাইকে বিনা মূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে। আমরাও আশা করি, সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোবে এবং টিকার কোনো সংকট হবে না। এখন সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে নিতে হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে করোনায় যত মানুষ মারা গেছে, তাদের ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স ৫১ বছরের ওপরে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের যত বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে, মৃত্যুর সংখ্যা তত কমে আসবে। সারা দুনিয়ায়ই তাই করা হচ্ছে। আশা করি, আমাদের এখানেও তেমনটাই করা হবে।
দ্রুত বাড়ছে করোনা রোগী। হাসপাতালগুলো শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি করার পরও অনেকে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। আইসিইউ শয্যার সংকট আরো বেশি। হাই ফো ন্যাজাল ক্যানুলার অভাবে অনেক রোগীকে ঠিকমতো অক্সিজেন দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে মৃত্যু। এ অবস্থায় রোগীর সংখ্যা যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে তাদের চিকিৎসা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। বিনা চিকিৎসায় বহু মানুষ মারা যাবে। এমন অবস্থা যাতে না হয়, সে জন্যই কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে করোনা রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে।