তানভীর দিপু:
কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটের চিকিৎসক জাকি উদ্দিনের
বাবা-মায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জেলা করোনা কমিটির উপদেষ্টা ও সদর
আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেছেন, আমরা কুমিল্লাতে
অনেক কষ্ট করে করোনা হাসপাতাল গুলো চালু করেছি। কুমিল্লা সদর হাসপাতালে
নতুন ৯০ শয্যা চালু করেছি। অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও শুধু মানুষের কথা
চিন্তা করে এই হাসপাতাল গুলো চালু করা হয়েছে। প্রাইভেট একটি মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালেও ৫০ শয্যা প্রস্তুত আছে। যারা যুদ্ধে আছে তাদেরকে সহায়তা করা
লাগবে। তাদেরকে হতাশ করা যাবে না। যেসব ডাক্তাররা বাড়িতে থেকে কোভিডের
চিকিৎসা করে যাচ্ছেন তাদের পুরো পরিবার ঝুঁকির মধ্যে। এর আগে ডাক্তারদের
আইসোলেশনের জন্য পুরো আওয়ামীলীগ অফিস দিয়ে দেয়া হয়েছিলো। আবার যদি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি ও সিভিল সার্জন অনুমোদন দেয় তাহলে আমরা আবার
সেটা দিয়ে দিবো।
গতকাল কুমিল্লার মানুষের জন্য আরো ৭৮ হাজার ৪শ ডোজ
সিনোফার্ম এর ভ্যাকসিন আসলে সেগুলো সিভিল সার্জনের উপস্থিতিতে গ্রহন করেন
এমপি বাহার। সে সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
ডা. জাকি
উদ্দিনের বাবা-মায়ের মৃত্যুতে করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন এবং হোম
কোয়ারেন্টাইন পালন করা বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক
হোসাইন জানান, এরকম মৃত্যু কোন ভাবেই কাম্য নয়। তবে করোনাকালীন এই দূর্যোগে
চিকিৎসকদের ভালো সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা দিলে আরো ভালো সেবা পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ম্যাডিকেল এসোসিয়েশন কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ডা.
আতাউর রহমান জসিম জানান, কুমিল্লায়ও করোনা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য
আলাদাভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। কিন্তু পরে
সরকারি আদেশেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা
থাকলে করোনা চিকিৎসকদের পরিবার বা স্বজনরা করোনার ঝুঁকি থেকে অনেকটাই
মুক্ত থাকেন।
উল্লেখ্য, করোনায় মা’কে হারানোর পর ৬ মাসের ব্যবধানে
বাবাকেও হারালেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক
জাকি উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা
ইউনিটে তারই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাকি’র বাবা সালাউদ্দিন(৬৬)।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাস ছয়েক আগে মৃত্যুবরণ করেন জাকি উদ্দিনের মা-জাহানার
নাসরিনও (৫৬)। সে সময় তার পরিবারের মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী সবাই ঢাকা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় কলেজ হাসপাতালে করোনার
চিকিৎসা নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেখানে আইসিইউতে থাকা অবস্থায়
মৃত্যুবরন করেন তার মা। গতকাল বাবা হারানোর পর ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস
দিয়ে জাকি জানান, ‘করোনা ইউনিটে চাকরি করে বাবা-মাকে মেরে ফেললাম। আমি আর এ
পেশায় থাকতে চাইনা।’
তার স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন- আমার বাবা ও মায়ের জন্য দোয়া করবেন...
covid
rooster e night duty te silam... abbur obostha kharap shune ami duty
theke ambulance niye giye hospitale niye ashlam..Bt atkaite parlam
na...gyan thaka obosthay boltesilo....Boro babu bebostha korbe....
ami abbu ammur khub shundor bebostha kore disi...ekdom etim hoye gesi 6 masher vitor
covid diye infected kore mere felsi...No parents deserve a child like me, who kills their parents within 6 months...
i think i shall not continue this profession anymore
কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রেজাউল করিম জানান, জাকি
উদ্দিন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করার পর এক বছর আগেই ৩৯তম বিসিএসের
মাধ্যমে আবার এই হাসপাতালেরই করোনা ইউনিটে চিকিৎসক হিসেবে চাকুরিতে যোগ
করেন। কুমিল্লা নগরীর রেসকোর্সে একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে
থাকতেন তিনি। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে। তার বাবা-মায়ের
মৃত্যুতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।