বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে করোনায় রেখা সুলতানা (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। তাকে নিজ গ্রামের বাড়ি কাউখালীতে নিয়ে এলে করোনার ভয়ে পাশে ছিল না কোনো আত্মীয়স্বজন বা এলাকাবাসীকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে পড়ে থাকে তার মরদেহ। এ সময় তাকে গোসল করানোর জন্য এগিয়ে আসেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের উজিয়ালখান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। করোনায় মৃত রেখা একই গ্রামের সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী।
জানা যায়, উজিয়ালখান গ্রামের রেখা সুলতানা করোনা আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শেবাচম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে কাউখালীর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে পালিয়ে যান আত্মীয়স্বজনরা। এছাড়া এগিয়ে আসেননি কোনো এলাকাবাসীকেও। বিষয়টি জানতে পারেন ইউএনও খালেদা খাতুন।
ওই রাতেই ইউএনও এবং স্বেচ্ছাসেবী মাহফুজা মিলি ও শামীমা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই মৃত ওই নারীর গোসলের কাজে অংশ নেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও খালেদা খাতুন বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই আমি দুজন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে সেখানে হাজির হই ও মরদেহ গোসল করানোর কাজে অংশ নেই।
তিনি আরও বলেন, আগে কখনো মরদেহ গোসল করানোর অভিজ্ঞতা ছিল না। গোসল করানোর আগে নিয়মরীতি সব শিখে নিতে হয়েছে। সুরক্ষাসামগ্রী পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাকে গোসল ও কাফনের কাপড় পরানো হয়। রাত ১২টার দিকে উজিয়ালখান গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের স্বামী সোলাইমান হোসেন বলেন, তার স্ত্রী গত সাতদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। বুধবার (৭ জুলাই) কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ওই রাতেই তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে প্রথমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।