স্বামীকে হত্যার পর রান্নাঘরে পুঁতে রেখে সেখানেই নিয়মিত আড়াই মাস রান্না চালিয়ে গেছেন স্ত্রী। মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব শীলমন্দি এলাকায় রোমহর্ষক এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আকলিমাসহ (৪০) দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম আরাফাত মোল্লা (৪৩)। শুক্রবার বিকেলে পূর্ব শীলমন্দি এলাকার নিজ বাড়ির রান্না ঘরের মেঝে খুঁড়ে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে থেকে আরাফাত নিখোঁজ রয়েছেন জানিয়ে মুন্সীগঞ্জ থানায় ১৫ মে একটি জিডি দায়ের করেন আরাফাতের স্ত্রী আকলিমা আক্তার। জিডি করেই সে বাবার বাড়ি চলে যায়। এদিকে, আরাফাত মোল্লা নিখোঁজের আলোকে আত্মীয়স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পুলিশও চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
কিন্তু শুক্রবার সকালে আরাফাতের স্ত্রী আকলিমা আক্তার তার স্বামীর বন্ধু মো. শিপলু সরকারের সাথে কথা বলার এক ফাঁকে তার স্বামী আরাফাত মোল্লাকে খুন করার কথা স্বীকার করেন। সঙ্গে সঙ্গেই শিপলু সরকার মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশকে ফোনে বিষয়টি অবগত করে। পরে পুলিশ ঘনটাস্থলে গিয়ে আরাফাতের স্ত্রীকে ও তার সহযোগী পাশের বাড়ির মতিনের মেয়ের জামাই (যশোর জেলার) রিয়াজ মিয়াকে (২৫) আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
একপর্যায়ে আকলিমার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, আরাফাতকে হত্যা করে তাদের রান্নাঘরে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মাটির নিচ থেকে গলিত লাশ উদ্বার করে। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মোমেন বলেন, গেল রমজান মাসের শেষের দিকে আরাফাত নিখোঁজের আলোকে তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তদন্তের স্বার্থেই আমরা তার স্ত্রীকে ইন্টারগেশন করি এবং আমাদের ইন্টারগেশনে আরাফাতের স্ত্রী স্বীকার করে সে এবং তার সহযোগী মিলে আরাফাতকে হত্যা করে লাকড়ি রাখার ঘরে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে।
পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে ঘটনাস্থল নিয়ে আসি এবং তার দেখানো স্থান থেকে আরাফাতের লাশ উদ্বার করি। আকলিমা ও তার সহযোগী রিয়াজকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে আকলিমা আদালতের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। এসময় সে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছে এবং নৃসংশভাবে হত্যার ঘটনা বর্ণনা করেছে। তদন্তের স্বার্থে যা এখন বলা হচ্ছে না। পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।