মো. হাবিবুর রহমান
কুমিল্লার মুরাদনগরে বখাটেদের হাতে খুন হওয়া অটো চালক জলিল মিয়ার (৩৫) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শনিবার বিকেলে তার লাশ উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কুলুবাড়ি বাড়িতে আসলেই স্বজনদের বুকফাটা আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। পরিবার একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিকে আচমকা এ ভাবে হারিয়ে পাগল প্রায় স্ত্রী শাহনাজ বেগম ও মেয়ে জান্নাত আক্তার। বার বার মূর্চা যাচ্ছেন রড় ভাই দুলাল মিয়াও। জলিলের লাশ দেখতে আসা প্রতিবেশীরাও বার বার চোখ মুচ্ছিলেন। সে সহজ-সরল ও প্রতিবেশীদের সাথে অনেক মিশুক ছিলেন বলেই তারা আবেগ তারিত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় কোম্পানীগঞ্জ বাজার থেকে ৩জন যাত্রী নিয়ে উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে যায় অটো চালক জলিল মিয়া। পরে ওই গ্রাম থেকে এক কিশোরীকে তুলে আনার প্রস্তাব করলে অটো চালক এতে রাজি হয় নাই। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে গাড়ী ভাড়া নেওয়া বখাটেরা কোমর থেকে ছুরি বের করে জলিল মিয়ার পেটে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আঘাত পেয়ে পেট চেপে ধরে অটো চালক জলিল মিয়া দৌড়ে পাশের এক বাড়িতে গিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার দেয়। বাড়ি থেকে লোকজন বেড়িয়ে এসে তার চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনে। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই চিকিৎসক তাকে জরুরী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তার আত্মীয় স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। জলিল মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতেই তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শনিবার ভোর আনুমানিক ৫টায় চিকিসাধীন অবস্থায় জলিল মিয়া মারা যায়। এ দিকে দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে জলিল মিয়ার লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়। বিকেলে জলিল মিয়ার লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসলে এলাকাবাসী হত্যাকারীদের অভিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবি জানায়। খুন হওয়া জলিল মিয়া কুলুবাড়ি গ্রামের মৃত সাজত আলীর ছেলে।
মুরাদনগর থানার ওসি সাদেকুর রহমান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। উক্ত ঘটনায় জড়িত আসামীদের চিিহ্নত করে গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া চলছে।