করোনাভাইরাস শঙ্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্যাম্প কেঁপে ওঠার পর সিরিজটাই বাতিল হতে বসেছিল। শেষমেশ শঙ্কা কেটে ৪৮ ঘণ্টা পর শুরু হয় স্বাগতিকদের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ওয়ানডে। করোনার ভয়ে হোক, কিংবা ক্যারিবিয়ানদের দুর্দান্ত বোলিংয়েই হোক, অস্ট্রেলিয়ার এমন বাজে ব্যাটিং সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। বার্বাডোসে সফরকারীদের টপ অর্ডার স্রেফ উড়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ওয়ানডে ৪ উইকেটে জিতেছে ক্যারিবিয়ানরা। অস্ট্রেলিয়াকে ৪৭.১ ওভারে ১৮৭ রানে অলআউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-১ সমতায় ফেরায় স্বাগতিকরা।
অস্ট্রেলিয়ার ১৮৭ রানের স্কোর দেখে আসলে বোঝা যাবে না তাদের ওপর কী তাণ্ডব চলেছে। টপ অর্ডারের যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সে ৪৫ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছিল তারা! যেখানে আকিল হোসেইন ৬ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ। সফরকারীদের ভাগ্য ভালো শেষ ৪ উইকেট ইনিংসে ১৪২ রান যোগ করায় সম্মানজনক একটা স্কোর গড়তে পেরেছে। এজন্য কৃতিত্ব পাবেন অ্যাডাম জাম্পা ও ওয়েস অ্যাগার, নবম উইকেটে তারা ৫৯ রানের জুটি গড়েন।
এই ম্যাচের টস হয়েছিল দুই দিন আগে। অস্ট্রেলিয়ার টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। একাদশও একই থাকার কথা ছিল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অজিদের একাদশ পরিবর্তনের অনুমতি দিলে চোটে পড়া জশ হ্যাজেলউডের জায়গায় খেলার সুযোগ পান ওয়েস অ্যাগার।
অ্যারন ফিঞ্চবিহীন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের কেউ কিছু করতে পারেননি। জশ ফিলিপে (১৬), বেন ম্যাকডেরমট (০), মিশেল মার্শ (৮), মোয়েসিস হেনরিকস (৪), অ্যালেক্স ক্যারি (১০) ও অ্যাশটন টার্নার (১) ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দিয়েছেন সবাই। তাদের হতাশার দিনে সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস খেলেছেন দশ নম্বরে নামা অ্যাগার। আর ৩৬ রান করে করেছেন ম্যাথু ওয়েড ও জাম্পা।
অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে আকিল ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। তার সমান ৩ উইকেট নিতে আলজারি জোসেফের খরচ ৩৯ রান। ২ উইকেট পেয়েছেন শেলডন কট্রেল।
১৮৮ রানের লক্ষ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডারের অবস্থাও ভালো ছিল না। মিচেল স্টার্কের তোপে ৭২ রানে স্বাগতিকরা হারায় ৫ উইকেট। তবে নিকোলাস পুরান ও জেসন হোল্ডারের হাফসেঞ্চুরিতে জয় পেতে সমস্যা হয়নি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে প্রথমবার হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে হোল্ডার খেলেন ৫২ রানের ইনিংস। ৬৯ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায়।
তিনি আউট হলেও দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন পুরান। প্রয়োজনের সময় দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তিনি অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। ৭৫ বলে ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় সাজানো তার ইনিংসে আছে ভাগ্যের ছোঁয়া। ২৬ ও ৪৯ রানে দুইবার ‘জীবন’ পেয়েছেন এই উইকেটকিপার। প্রথমবার মিড-অফে হেনরিকস যে ক্যাচটি ছেড়েছেন, সত্যি ছিল হাস্যকর! ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে পুরানের হাতেই। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার মাঝে শাই হোপ খেলেন ৩৮ রানের ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সফল বোলার স্টার্ক। বাঁহাতি পেসার ১০ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ৯ ওভারে ৪৩ রান খরচায় ২ উইকেট জাম্পার।