ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেবীদ্বার সরকারী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় রোগিরা দিশেহারা
এ,বি,এম আতিকুর রহমান বাশার
Published : Friday, 6 August, 2021 at 7:08 PM
দেবীদ্বার সরকারী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় রোগিরা দিশেহারাবৃহস্পতিবার ভোর থেকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০বেডের করোনা ইউনিটের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিষ্টেম বন্ধ হয়ে আছে। অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ থাকায় রোগী ও রোগীদের স্বজনদের মধ্যে চলছে হাহাকার। বিত্তবানরা তাদের রোগী বাঁচাতে আলাদা অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে এবং ভাড়ায় আনলেও সাধারন দরিদ্র রোগীদের স্বজনরা ভোর থেকেই একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে হন্য হয়ে ঘুরছেন দিকবিদ্বিক। 
কেউ কেউ ব্যাক্তি ও বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিস থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের অব্যবস্থাপনায় এবং নজরধারীর অভাবেই এমনটা হয়েছে বলে রোগীর স্বজনদের দাবী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আহাম্মেদ কবির বলেন, আমাদের সরকারী হাসপাতালের অক্সিজেন রিফিলের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ‘স্পেক্টা’ কোম্পানীর সাথে চুক্তিবদ্ধ। অক্সিজেন শেষ হলে সিলিন্ডারগুলো জমিয়ে তারা ঢাকায় নিয়ে যান, ওরা ওদের মতো ৩/৪ দিন বা তারও পরে আমাদের কাছে সরবরাহ করেন। ওনারা সময়মতো না দিলে আমরা কি করতে পারি ? এছাড়া ষ্পেক্টা’র বাহিরে আমাদের রিফিল করারও কোন নিয়ম নেই।
অক্সিজেনের অভাবে কোন মূমূর্ষ রোগীর মৃত্যুর কারন হলে তার দায়ভার কে নেবেন ? জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আহাম্মেদ কবির কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, বিভিন্ন ব্যাক্তি ও সংস্থা কর্তৃক দেয়া ১৪ টি ৫০ লিটারের মাদার সাইজের অক্সিজেন সিলিন্ডারের বাহিরে স্বাস্থ্য বিভাগের নিজস্ব মাঝারী ৬টি এবং ছোট ৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ষ্টোরকিপার মোঃ মামুনুর রশীদ’র সহযোগীতায় একটি সিন্ডিকেট এ অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো ব্যাবহারে বিরত থেকে বহিরাগত অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়িদের সুযোগ করে দেন, তারা ঘন্টা হিসেবে উচ্চদামে সাধারন রোগীদের নিকট অক্সিজেন সরবরাহ করে আসছেন। স্পেক্টার থেকে সিলিন্ডার রিফিলের টাকা ষ্টোর কিপার বিল ভাউচারে করিয়ে নেন। প্রায়ই অক্সিজেনের প্রয়োজনে রোগীদের স্বজনরা বাহির থেকে ভাড়ায় কিংবা ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিস থেকে এনে জীবন রক্ষায় চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ওই কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আরো জানান, সরকার নানাভাবে স্বাস্থ্য সামগ্রী ও বিশেষ বরাদ্ধ দিয়ে আসলেও বিশেষ প্রয়োজনে ওই বরাদ্ধ ববহার করা হচ্ছেনা। এমনকি এসময়ে দানকৃত ১৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলের কোন উদ্যোগ গ্রহন করছেননা। যারা সিলিন্ডার দিয়েছেন রিফিলের জন্য তাদের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দাতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যা দিয়েছি তা একেবারেই দিয়েছি। এসবের রক্ষনাবেক্ষন করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর পরেও যদি রিফিলের টাকার সমস্যা হয়, করোনা ইউনিটের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিষ্টেম বন্ধ না রেখে, রিফিল করে রোগীদের সেবা অব্যাহত রাখা উচিত ছিল, প্রয়োজনে বিল করে দিলেইতো ওই খরচের টাকা আমরা পরিশোধ করে দিতাম। যাদের সেবায় আমরা এসব সামগ্রী সরবরাহ করছি, সামান্য রিফিলের টাকার জন্য অক্সিজেন না পেয়ে রোগীদের জীবনমৃত্যু সন্ধিক্ষনে থাকতে হয় তাহলে এসব দিয়ে লাভ কি ?  
এ ব্যাপরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ষ্টের ইনচার্জ মোঃ মামুর অর রশীদ ও করোনা ইউনিটের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিষ্টেম চালুর টেকনেশিয়ান মোসলেমকে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেনি। 
করোনা ইউনিটের ভর্তিকৃত রোগীর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে ১০বেডের করোনা ইউনিটের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিষ্টেম বন্ধ ছিল, রাত সাড়ে ১২টায় কিছুক্ষনের জন্য চালু হলেও শুক্রবার বিকেলে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।