প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেই স্কুল খুলে দেব: প্রতিমন্ত্রী
Published : Wednesday, 25 August, 2021 at 12:00 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: স্কুল খুলে দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও সরকার মহামারী
পরিস্থিতি ‘আরেকটু স্বাভাবিক’ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক
ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলে
যে কোনো সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে বলে সাংবাদিকদের
জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্কুল খোলার বিষয়ে সাংবাদিকদের
প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা না পাওয়া
পর্যন্তৃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
সবার তো সিদ্ধান্ত লাগবে। স্কুল হুট করে খুলে দেওয়া যাবে না।
“আরেকটু
স্বাভাবিক হলে হয়ত খুলে দেওয়া যাবে। ঠিক বলতে পারব না কবে নাগাদ। যে কোনো
সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেৃ, আমাদের যদি আজকে বলে আমরা কালকে
খুলে দিতে প্রস্তুত আছি।”
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত
বছরের মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়া
হলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীরা
শ্রেণিকক্ষের বাইরেই রয়েছে।
শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ছাড়াও নানা মহল থেকে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে সরকারের উপর। এর মধ্যেই গত
১৮ অগাস্ট সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং টিকা
দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার
সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব দ্রুত স্কুলগুলো
খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন। সিচুয়েশনটা একটু স্বাভাবিক হলে আমরা খুলে দেব।
স্কুল খোলার সকল প্রস্তুতি আমাদের আছে।
সরাসরি ক্লাস না হলেও অনলাইন, সংসদ টিভি ও অফলাইনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত রাখার কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী
বলেন, “পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। বিজ্ঞজনরা মতামত দিচ্ছেন স্কুল খুলে
দেওয়ার ব্যাপারে। আমরাও তো জানি, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বাচ্চা-কাচ্চারা
বাড়িতে আছে। নানা ধরনের কর্মকা-ের সাথে জড়িত হচ্ছে। পড়াশুনা থেকে দূরে চলে
যাচ্ছে। খেলাধুলা নিয়ে মত্ত।
“তারপর অনলাইনেও আমাদের কিছু ডিস্টার্ব
হচ্ছে। অনেক বাজে গেমস-টেমসগুলো বাচ্চারা খেলছে। বাল্যবিয়ের প্রবণতাটা
কিছুটা বাড়ছে। এগুলো মিলিয়ে আমরা চাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব আমরা স্কুল খুলে
দেব।”
সেজন্য স্কুলগুলো প্রস্তুত রাখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যে কোনো
সময় স্কুল খুললে যেন আমরা আমাদের কাজকর্ম করতে পারি। স্কুল খোলার পরে আমরা
কী করব না করব, এই পরিস্থিতির আগেও আমাদের টিচাররা স্কুলে গেছে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যা কিছু লাগে, পড়ালেখার পরিবেশ যেন থাকে; সেটা আমরা
দেখছি।”
শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা ভেবে তাদের আলাদা আলাদাভাবে
শ্রেণিকক্ষে ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে জাকির হোসেন বলেন, “থ্রি, ফোর,
ফাইভ দুইদিন খুলব। ওয়ান-টু একদিন একদিন করে খুলব। এভাবে আমরা করতে চাচ্ছি।
আমাদের কারিকুলাম অনুযায়ী শর্ট সিলেবাসেও আমরা একটা চিন্তাভাবনা করছি।”
তবে পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক না হলে’ গতবছরের মত এবারও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার ইংগিত দেন তিনি।
“সিলেবাস
অনুযায়ী ওয়ার্কশিট দিচ্ছি। এই ওয়ার্কশিটের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের
শিক্ষকদের সাথে ছাত্রদের একটা সম্পৃক্ততা থাকছে। বইয়ের সাথে সম্পৃক্ততা
থাকছে। তখন ওয়ার্কশিটগুলোই আমরা মূল্যায়ন করব। প্রাথমিক সমাপনী সশরীরে
নেওয়া না গেলে আমরা মূল্যায়নের ভিত্তিতে নেব। স্কুল খুললে আমরা পরীক্ষা
নেব।”
প্রাথমিকের ৮৫ শতাংশ শিক্ষক ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন বলেও তথ্য দেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।