Published : Wednesday, 25 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 25.08.2021 1:25:25 AM
আলমগীর হোসেন, দাউদকান্দি।।
কুমিল্লার
তিতাস উপজেলার দড়িকান্দি শিবপুর ব্রিজের নদীতে লঞ্চের ছাদে ডিজে পার্টিতে
নাচানাচি করতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ১৫ কিশোর দগ্ধ এবং এক কিশোর নিহত
হয়েছে।
সোমবার রাত আনুমানিক ১০ টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চের ছাদে প্রায়
অর্ধশতাধিক কিশোর ডিজে পার্টিতে নাচানাচি করার সময় চালকের অসাবধানতায়
বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অন্তত ১৫ কিশোর দগ্ধ হয়। এসময়
জীবন রক্ষার্থে অনেক কিশোর নদীতে লাফিয়ে পড়েন। সাঁতার কেটে ও স্থানীয়দের
সহযোগিতায় তারা নিরাপদ স্থানে পৌছলেও সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া শামীম আহমেদ
(১৪) নামের এক কিশোর নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারে নেমে
তাকে খুঁজে পায়নি।
মঙ্গলবার সকালে ডুবে যাওয়া কিশোর শামীম আহমেদের লাশ
দড়িকান্দি ব্রীজের পাশে ভেসে আসলে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। নিহত শামীম
আহমেদ তিতাস উপজেলার শিবপুর গ্রামের সিএনজি চালক আবদুল মতিনের ছেলে। সে
স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
আহতদের মধ্যে ৯ জনকে
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৬
জনকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাটানো
হয় এবং ৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায়। তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেয়া আহত ৬ জনের মধ্যে ৩ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয় এবং ৩ জন
চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শিবপুর গ্রামের ৩০/৪০ জনের
একদল কিশোর লঞ্চে ডিজে পার্টি করার জন্য সোমবার বিকেলে আনন্দ ভ্রমণে বের
হয়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে লঞ্চের ছাদের উপর ডেকসেট
বাজিয়ে গানের তালে তালে নাচানাচি করার সময় চালকের অসাবধানতায় দড়িকান্দি
ব্রীজের নিকট বিদ্যুতের সাথে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৫ জন দগ্ধ হয়।
শামীম আহমেদ নামের এক কিশোর বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়।
রাতে আহতদের উদ্ধার করে দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে যান
দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন ও
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলাম খান।
অপরদিকে দ্রুত
ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মদ রাশেদা আক্তার,
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সুধীন চন্দ্র দাস।
এব্যাপারে
কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো: জুয়েল রানা
বলেন, এই উচ্ছৃংখল ডিজে পার্টির মত ক্রমবর্ধমান কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে
পুলিশ যথেষ্ট তৎপর। যেহেতু কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার
বিষয়ে আইনী জটিলতা আছে। সেক্ষেত্রে পুলিশের পাশাপাশি পিতা-মাতা,
জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন নাগরিকদের অবশ্যই তাদের সন্তানদের সর্বদা দেখেশুনে
রাখতে হবে। নাহলে আমাদের কিশোর সমাজ বিপথে চলে যেতে পারে, এতে সমাজ
ব্যবস্থার শৃংখলাই ভেংগে পড়বে।