নিজস্ব
প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ১০২ জনের
মৃত্যু হয়েছে, যা দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। সর্বশেষ ২৬ জুন এর চেয়ে কম
মৃত্যু হয়েছিল। সেদিন মোট ৭৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মৃত্যুর সংখ্যা পাশাপাশি শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও গত এক কিছুটা কমে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪
হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে দেশে ৪ হাজার ৬৯৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর
হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ ছিল।
সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৬২৮ জন কোভিড রোগী শনাক্ত
হল; তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মোট ২৫ হাজার ৭২৯ জনের।
বুধবার স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪ হাজার ৯৬৬ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা
জানিয়েছিল। আর মৃত্যু হয়েছিল ১১৪ জনের। সেই হিসেবে এক দিনে শনাক্ত রোগী আর
মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই কমেছে। গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ২ হাজার ৬০১
জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের
অর্ধেকের বেশি। আগের দিন এ বিভাগে ২ হাজার ৭২৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
যে
১০২ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৩৭ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের।
চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে
সেরে উঠেছেন আরও ৮ হাজার ৩১৪ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৫
জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল
গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত জুন থেকে রোগীর
সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ১৪ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৩ অগাস্ট। তার আগে ২৮ জুলাই
দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের
১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত ২০ অগাস্ট তা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫
অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক
দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৪
লাখ ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ কোটি ৩৮ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৩৪ হাজার ১১১টি
নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭৬৫টি
নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক
৭৭ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১
দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৬৭ জন
নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের গাজীপুরে ১১৫ জন এবং
নারায়ণগঞ্জে ১৩১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে
চট্টগ্রাম জেলায় ৩০৬ জন, কক্সবাজারে ১০৪ জন এবং কুমিল্লায় ১১৬ জন নতুন
রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। অন্য বিভাগগুলোর বিভিন্ন জেলার মধ্যে
ময়মনসিংহ জেলায় ১১৫ জন, রংপুরে ১০৪ জন এবং সিলেটে ১০১ জনের মধ্যে সংক্রমণ
ধরা পড়েছে গত এক দিনে।
ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে,
তাদের ২৪ জন, অর্থাৎ, অর্ধেকের বেশিই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে
মারা যাওয়া ২৪ জনের মধ্যে ৭ জন চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া
খুলনা বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, রংপুর বিভাগে
৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে গত এক
দিনে।
মৃত ১০২ জনের মধ্যে ৩৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৩৩ জনের
বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১০ জনের
বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ২ জন করে মোট ৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ ও ১১
থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৫২ জন ছিল পুরুষ এবং ৫০ জন
নারী। তাদের মধ্যে ৭৫ জন সরকারি হাসপাতালে, ২৬ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১
জন বাসায় মারা যান।