ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
  আশার আলো ছড়াচ্ছে ‘দেবিদ্বার আইসোলেশন সেন্টার’
Published : Saturday, 28 August, 2021 at 12:00 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার।
করোনার চিকিৎসায় রোগীদের জন্য এখন ভরসা সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দেবিদ্বার আইসোলেশন সেন্টার। এ সেন্টারে ৩০টি বেডের জন্য রয়েছে ছোট-বড় প্রায় ১৬০টিরও বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার। যা দিয়ে ২৪ ঘন্টায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। উন্নত পরিবেশ ও আন্তরিক সেবার কারণে আশপাশের অনেক উপজেলা থেকেও রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন এখানে।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সবগুলো বেডেই রোগী। চারজন চিকিৎসক রয়েছেন রোগীদের দেখভালের জন্য। এছাড়াও হ্যালো স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও হ্যালো ছাত্রলীগের অনেকেই দেখা গেছে, অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের ওষুধপত্র ব্যবস্থাসহ রোগীদের নাশতা ও খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। চিকিৎসকের পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে চলছেন হ্যালো স্বেচ্ছাসেবকলীগ, হ্যালো ছাত্রলীগ। তাঁদের তদারকি ও চিকিৎসকের আন্তরিক সেবায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেক রোগী।
আইসোলেশন সেন্টারের তত্ত¦াবধায়ক মো. ময়নাল হোসেন ভিপি বলেন, এখানে কোন রোগী ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত এক টাকাও খরচ করতে হয়না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া এ পর্যন্ত ৫৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে আরও ১০ জন রোগী রয়েছেন। তাঁরাও দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।  
মুরাদনগর উপজেলার সাতমোড়া গ্রাম থেকে আইসোলেশন সেন্টারে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন অলেক মিয়া। তিনি বলেন, গত আটদিন ধরে এখানে আছি। কোন টাকাপয়সা খরচ করতে হয়নি। ওষুধপত্র-খাবার এখান থেকেই দেওয়া হচ্ছে। একটু পর পর চিকিৎসক রোগীদের খোঁজ খবর নেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। এছাড়াও হ্যালো স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও হ্যালো ছাত্রলীগের দুটি টিম সার্বক্ষনিক এখানে থাকছেন। রোগীদের কখন কি লাগবে তারাই সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
ফতেহাবাদ পৌর এলাকার আ.করিম (টেইলার্স) বলেন, অসুস্থ হয়ে গত পাঁচদিন ধরে এখানে ভর্তি আছি। বিনামূল্যেই অক্সিজেন, খাবার ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। আমি এখন অনেকটাই সুস্থ, তবে আরও দুই একদিন থাকতে বলছেন।
দেবিদ্বার আইসোলেশন সেন্টারের চিকিৎসক ডা. চিন্ময় সাহা ও ডা. মো. রবিউল  ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে আক্রান্ত রোগীদের খুব চাপ ছিলো  খুব বেশি। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অনেকেরই অক্সিজেন সিচুরেশন খুবই সামান্য ছিলো। এদের মধ্যে অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৩জনকে কুমিল্লায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিদের এখানে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৫ পর্যন্ত  আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আজ কালের মধ্যে আরও পাঁচজন সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহাম্মদ কবীর জানান, প্রথম অবস্থায় করোনা রোগীদের চাপ ছিলো খুব বেশি। অক্সিজেন সংকটে হিমসীম খেতে হয়েছে চিকিৎসদের। শেষ পর্যন্ত আশার আলো জাগাচ্ছে  দেবিদ্বার আইসোলেশন সেন্টার। যেখানে রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, ৪জন চিকিৎসক আছেন, ৯জন নার্সসহ ১৬০ টির মত অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গত ৬ আগস্ট সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের নিজস্ব উদ্যোগে আইসোলেশন সেন্টার চালু  করা হয়। ৩০ শয্যার এ সেন্টার চালু হওয়ার পর ২৭ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সুস্থ হয়ে প্রায় অর্ধশত রোগী বাড়ি ফিরেছেন। অক্সিজেন সেবা এবং দামি ওষুধও বিনামূল্যে এখান থেকে দেওয়া হচ্ছে।
করোনা আইসোলেশন সেন্টারের উদ্যোক্তা সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বলেন, দেবিদ্বারে কোভিট আক্রান্ত রোগীরা যাতে বিনামূল্যে সকল চিকিৎসা সেবা পান সে জন্য ৩০ শয্যার দেবিদ্বার আইসোলেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে ভর্তি থেকে শুরু করে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওষুধ ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ কাজ করে যাচ্ছেন।