আবারও বেড়েছে নারী মৃত্যু
Published : Saturday, 28 August, 2021 at 12:00 AM
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারী মৃত্যু বেশি। একদিনে মারা যাওয়া ১১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৫ জন আর নারী ৬১ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানাচ্ছে, দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট পুরুষ মারা গেলেন ১৬ হাজার ৮১৬ জন আর নারী নয় হাজার ৩০ জন।
এর আগে গত ১৯ আগস্টও করোনায় মারা যাওয়া ১৫৯ জনের মধ্যে পুরুষ ছিল ৭৬ জন আর নারী ৮৩ জন। তারও আগে গত ১২ আগস্ট দেশে প্রথমবারের মতো একদিনে মৃত্যুর তালিকায় পুরুষের চেয়ে নারী বেশি ছিল। সেদিন অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২১৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১০৭ জন এবং নারী ১০৮ জন। দেশে সেদিনই প্রথম পুরুষকে ছাড়িয়েছে নারী মৃত্যু।
প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ে নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। যদি আক্রান্তের হার বেড়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুও বেড়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমীন।
বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, প্রথম ঢেউয়ের সময়ে যে স্ট্রেইন ছিল সেটা উচ্চমাত্রায় সংক্রমিত ছিল না। ফলে পুরুষ বাইরে বেশি যাওয়ার কারণে তারাই কেবল সংক্রমিত হতেন। কিন্তু এবারের স্ট্রেইন যেহেতু হাইলি ইনফেকশাস, যার কারণে বেশিরভাগ পরিবারে একজন সংক্রমিত হলে তার মাধ্যমে অন্যরা সংক্রমিত হয়েছেন।
তাই এবার নারী ও শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হারও বেশি- বলেন অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এখন এ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নারী ও পুরুষের সংখ্যা কাছাকাছি। আর প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় নারীর হার তো অনেক বেশি।
দেশের পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিকভাবে খুব ভালো অবস্থা ছাড়াও নারীদের হাসপাতালে আসার বিষয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় জড়িত উল্লেখ করে অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হবার বিষয়ে বাড়ির পুরুষরা বেশি প্রায়োরিটি পায় একজন নারীর তুলনায়। সেই সঙ্গে নারীরাও হাসপাতালে ভর্তি হতে চান না।
কিন্তু একদম শেষ মুহূর্তে যখন শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তখন অনেক নারীকে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু সে সময় আর কিছু করার থাকে না। তিনি বলেন, মুগদা হাসপাতালে ২০০ জনের মৃত্যু নিয়ে করা একটা জরিপে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি হবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা মারা গেছেন। অর্থাৎ হাসপাতালে তারা আসেই দেরি করে।
আবার কয়েকদিন আগে হাসপাতালে যখন বেড সংকট ছিল তখন চাইলেও অনেককে ভর্তি করা যায়নি। তারা বাড়িতে ফিরে গেছেন আর একেবারে অবস্থা খারাপ না হওয়া পর্যন্ত আসেননি। এ কারণে এবারে বাড়িতে মৃত্যুও বেড়েছে, বলেন অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন।