ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
১৩ দিন পর ৪ মাতব্বরসহ ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
* ধামাচাপা দিতে ৭০ হাজার ভাগাভাগি
Published : Friday, 27 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.08.2021 1:12:58 AM
 ১৩ দিন পর ৪ মাতব্বরসহ ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলামো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ।।
সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনার অবশেষে ১৩ দিন পর ৪ মাতব্বর ও ধর্ষকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় গ্রাম্য মাতব্বরদের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে ৭০ হাজার টাকা ভাগাভাগি করারও অভিযোগ ওঠেছে। গত ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কেমতলী গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ধর্ষক কাশেম মিয়া (৫৫) পালাসুতা গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী দারোরো দ্বীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। লকডাউনের কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় মায়ের সঙ্গে ৩টি ছাগল লালন পালন করেন। ঘটনার দিন দুপুরে প্রতিদিনের মতো ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ীর আঙ্গীনায় যায়। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ওই ছাত্রী ঘরে আসলে কিছু বুঝে উঠার আগেই উৎপেতে থাকা কাশেম মিয়া তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত কাশেম মিয়া দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ীর লোকজন এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর মা-বাবা স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থী হয়। তারা ওই পরিবারটিকে কোন প্রকার সহযোগিতা না করে উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলা হয়। এর মধ্যে উক্ত বিষয়ে থানায় মামলা করতে যাওয়ার পথে পালাসুতা গ্রামের অভিযুক্ত ধর্ষক কাশেম মিয়ার ছেলে আক্তার হোসেন (৩০), কাশেম মিয়ার ভাই হযরত আলী হর্জন (৪০), কেমতলী গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম (৪৫) ও দারোরা গ্রামের মৃত সফর আলীর ছেলে মনির হোসেন (৪৮) ভূক্তভোগি পরিবারকে বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা বলে। আর যদি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়, তাহলে পুরো পরিবারকে মেরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও পরিবারটি ইজ্জতের মূল্য ও বিচার কোনটাই না পেয়ে গ্রাম্য মাতব্বরদের হুমকি-ধমকিতে উল্টো আতংক-উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছিল। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পেরে বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি। তখন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের অভয় দিলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তারা। তাৎক্ষনিক বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে সকল প্রকার সহযোগিতা করার আশ^াস দিয়ে বুধবার রাতেই ওই পরিবারটিকে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই ৪ মাতব্বরসহ অভিযুক্ত ধর্ষকের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
মুরাদনগর থানার ওসি সাদেকুর রহমান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ঘটনার পর থেকে ধর্ষক কাশেম মিয়া ও অভিযুক্ত মাতব্বররা পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।