প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য মরহুম আলী আশরাফ সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি বিষয়ে ১৫টি বই লিখেছেন। এগুলো আগামী প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করবে।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে আনীত শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য আলী আশরাফের মৃত্যুতে আনা শোকপ্রস্তাব পরে সর্বসম্মতক্রমে গৃহীত হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন। পরে আলী আশরাফসহ মৃত্যুবরণকারীদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী।
শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুম আলী আশরাফের আত্মার মাগফিরাত ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।
আমরা অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানকে হারিয়েছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ভর্তি হওয়ার পর আমি প্রতিনিয়ত খবর নিয়েছি। আশা ছিল বেঁচে ফিরে আসবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য অনেক চেষ্টা করেও তাকে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারলাম না। না ফেরার দেশেই তিনি চলে গেছেন। এই সংসদের অনেক সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। এটা সত্যিই দুঃখজনক।
আশী আশরাফ একজন জ্ঞানী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা একজন দক্ষ সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি। তিনি নবীন সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতেন।
সংসদ নেতা বলেন, তিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচন করতেন, সেই চান্দিনা (কুমিল্লা) এলাকা- সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি কর্নেল রশিদের বাড়ি। আর তার পাশেই খন্দকার মোশতাকের বাড়ি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে একটা নির্বাচন হয়। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে সেই নির্বাচনটি করেছিলেন। সকল রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচন বয়কট করেছিল। ভোটারবিহীন নির্বাচন- সারা বাংলাদেশে সেনাবাহিনী নামিয়ে, প্রশাসন-গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে নির্বাচনটা করা হয়। সেই নির্বাচনে ওই চান্দিনা থেকে কর্নেল রশিদকে নির্বাচিত করে সংসদে নিয়ে আসেন এবং খালেদা জিয়া তাকে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা থেকে নির্বাচিত করেছিল মেজর হুদাকে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের খুনিদের জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি দিয়ে পুরষ্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। খালেদা জিয়া বোধহয় তার থেকে আরও একধাপ ওপরে গিয়ে জনগণের সংসদ, সেই সংসদে একজন খুনিকে এনে বসায়। পরবর্তীতে ওই আসনে আবার আলী আশরাফ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন।
অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সরকার দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মুহম্মদ ফারুক খান, সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, বিকল্প ধারার আব্দুল মান্নান, গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মো. মনসুর আহমেদ আলোচনায় অংশ নেন।