দেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার তুলনায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ১০ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে প্রায় তিন মাস পর।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সোয়া ৩০ হাজারের বেশি
নমুনা পরীক্ষা করে দেশে ৩ হাজার ৬২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা
পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৭৯ জনের।
তাতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়াচ্ছে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, যা ৩ জুনের পর সর্বনি¤œ।
সেদিন
প্রায় ১৭ হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৬৮৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ
ধরা পড়েছিল, শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। জুলাই মাসের বেশিরভাগ সময়
এই হার ৩০ শতাংশের আশেপাশে ছিল।
এক দিনে মৃত্যুর এই সংখ্যা গত ২৬ জুনের
এর চেয়ে সবচেয়ে কম। সেদিন মোট ৭৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। আর দৈনিক শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা ১৯ জুনের পর সবচেয়ে কম। সেদিন দেশে ৩ হাজার ৫৭ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়েছিল।
সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৩ হাজার ৬৮০ জন
কোভিড রোগী শনাক্ত হল; তাদের মধ্যে ২৬ হাজার ২৭৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে
করোনাভাইরাস।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার
৩৫৭ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। আর মৃত্যু হয়েছিল ৮৬ জনের। সেই
হিসেবে গত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যু দুটোই কমেছে।
গত এক
দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ হাজার ৬৪৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা
পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। যে ৭৯ জন গত এক দিনে মারা
গেছেন, তাদের ৩২ জনই ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের। ঢাকা বিভাগে ২৮ জনের মৃত্যু
হয়েছে।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন আরও ৫ হাজার ৯৯৯ জন। তাদের নিয়ে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৮৪ জন এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা
ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করে এসে ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ
পেরিয়ে যায়। এর আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম
মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার
ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা
মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ কোটি ৭৬ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৩০ হাজার ২৯৪টি নমুনা
পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৯ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩৯টি নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, যা আগেরদিন ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ ছিল।
এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। শনাক্ত অনুযায়ী সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
গত
একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের ঢাকা ২৮ জন ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম
বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, খুলনা বিভাগে ৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৩
জন, সিলেট বিভাগে ৮ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা
ছিলেন ৩ জন।
মৃত ৭৯ জনের মধ্যে ১ জনের বয়স ছিল ১০০ বছরের বেশি। এছাড়া ৪৭
জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের মধ্যে, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের
বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৩
জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ৪৩ জন ছিলেন পুরুষ,
৩৬ জন ছিলেন নারী। ৬১ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৩
জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।