শুধু
সমালোচকদের কথা বলা কেন, অতি বড় বাংলাদেশ ভক্তও খুশি নন। তাদের সবার বদ্ধ
মূল ধারনা, এতো স্লো ও লো পিচে খেলে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বড়
ব্যবধানে সিরিজ জিতেও বিশ্বকাপে তেমন লাভ হবে না টাইগারদের। কারণ দেশের
মাটিতে শেরে বাংলায় যে উইকেটে খেলা হচ্ছে সেটা মোটেও আদর্শ টি-টোয়েন্টি
উইকেট নয়।
টি-টোয়েন্টি পিচ মানেই ফ্ল্যাট ব্যাটিং পিচ, ব্যাটসম্যানদের
স্বর্গ। নিদেনপক্ষে স্পোর্টিং পিচ। যেখানে বোলার ও ব্যাটসম্যান- উভয়ই
সুবিধা পাবে, বল ব্যাটে আসবে ও স্ট্রোক খেলা যাবে, চার-ছক্কার ফুলঝুরি
ঘটবে, রান হবে। আবার বোলাররা নিজের মেধা, দক্ষতা আর কারিশমায় সমীহ আদায় করে
নিতে পারবেন।
সেখানে শেরে বাংলার উইকেট বেজায় স্লথ। বল আসছে একদম
ঢিমেতালে। তাও থেমে থেমে। উচ্চতাও থাকছে কম। যে কারণে রান করতে গিয়ে
নাভিশ্বাস ব্যাটসম্যানদের। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটানো বহু দূরে- শট খেলাই
দায়। একটু বেপরোয়া ব্যাট চালালেই বিপদ। তাই রান খরা হোম অফ ক্রিকেটে, ১০০
রানকেই মনে হচ্ছে অনেক।
সেই রান টপকাতেও কষ্ট হচ্ছে। নিজেদের দেশে একদম
শতভাগ স্পোর্টিং ও আদর্শ টি-টোয়েন্টি পিচে খেলে বড় হওয়া অসি ও কিউইরা শেরে
বাংলার অনভ্যস্ত কন্ডিশনে খাবি খাচ্ছেন। আর সে কারণেই বোদ্ধারা টাইগারদের এ
বিপুল জয় ও সাফল্যকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আদর্শ প্রস্তুতি এবং
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির খোরাক বলে মানতে নারাজ।
বাংলাদেশের দুই সিনিয়র কোচ
সারোয়ার ইমরান আর নাজমুল আবেদিন ফাহিম জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপেও অমনটাই
জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় প্রশ্ন উঠলো, এমন স্লো-লো
উইকেটে প্রতিপক্ষকে একশ’র আশপাশে অলআউট করে জিতে কী লাভ হচ্ছে? এ জয় কি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনো সাহস, আস্থা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির দাওয়াই
হিসেবে কাজ করবে? এক কথায় এই জয়গুলো কি বিশ্বকাপের সত্যিকার প্রস্তুতি
হিসেবে ধরা যায়?
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ব্যাখ্যা দিতে
গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, উইকেট কন্ডিশনের চেয়ে জয়টা বড়। তার ভাবটা এমন,
আমরা কোন কন্ডিশনে খেলছি, সেটা বড় না। আমরা জিততে পারছি। জয়ের দেখা মিলছে
সেটাই বড়। সেটাই সবচেয়ে কার্যদর দাওয়াই। তিনি মনে করেন না, শেরে বাংলার এ
পিচে খেলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ। তার ভাষায় আমাদের আসল ও
সত্যিকার প্রস্তুতি শুরু হবে ওমানে।
তাই তো মুখে এমন কথা, ‘জয়টা কিন্তু
আত্মবিশ্বাস সবসময় বাড়ায়, হারতে থাকলে মানসিকতা এমনিতেই নেমে যায়। সে
হিসাবে জয়ের আত্মবিশ্বাস ধারাবাহিক থাকলে যে কোন জায়গায় আরেকটি সিরিজ বা
টুর্নামেন্ট ভালোভাবে খেলা যায়। সে হিসাবে এই জয়গুলোর ধারাবাহিকতায়
ক্রিকেটাররা অবশ্যই আত্মবিশ্বাস পেয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আর
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি কিন্তু ওমানে গিয়ে শুরু হবে। ওখানকার উইকেট কেমন...
আমরা কিন্তু কখনও ওমানে খেলিনি। তাই ওমানের উইকেট কেমন জানিও না। ওখানে না
যাওয়া পর্যন্ত তাই কোন পূর্ব ধারণা নেয়া এবং পরিকল্পনা আঁটাও সম্ভব না।’
‘আমি
মনে করি ওখানে না যাওয়া পর্যন্ত আগাম পরিকল্পনা করা মুশকিল। তো আমরা যখন
ওমানে যাবো তখন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু হবে। আর আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে
যে আমাদের ক্রিকেটারদের যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাস আছে ওখানে গিয়ে সবাই দ্রুত
মানিয়ে নিতে পারবে।’