ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লার হোমনায় পরকীয়া প্রেমিকের বাসায় পিয়নের মৃত্যু রহস্যাবৃত
Published : Sunday, 12 September, 2021 at 12:00 AM
ফলো আপ----শফিকুল ইসলাম পলাশ, হোমনা ||
কুমিল্লার হোমনায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসের পিয়ন মো. আলমের মৃত্যু রহস্যের জট খুলেনি। রাতে নিজ বাসায় না গিয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীর বাসায় হার্ট অ্যাটাকে মৃতুবরণ করলে রহস্যের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে শনিবার পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতির কোনও খবর জানাতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইকবাল মনির। কেন নিজ বাসায় না গিয়ে সেদিন ওই প্রবাসীর স্ত্রী রেহানা বেগমের বাসায় গেলেন আলম; এবং আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর ফোনে জানতে চাইলে- সাক্ষাতে বলবেন বলে এড়িয়ে গেছেন তদন্তকারী এই কর্মকর্তা। অবশ্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেছেন, রেহানা বেগমের সন্ধান পেতে চেষ্টা চলছে।
দাওয়াত খেয়ে পরিবারের লোকজনকে নিজ বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে তিনি কেন ওই নারীর বাসায় গেলেন, সঙ্গে কারা কারা ছিলেন, বাসায় আর কী কী ঘটনা ঘটেছিল, কেন হার্ট অ্যাটাক হলো অথবা মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা, ওই বাসায় কাদের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে? এসবের উত্তর এখনও অজানা।
হোমনা পূর্ব পাড়া গ্রামের বদল হাজীর বাড়ির তোতা মিয়ার মেয়ে রেহানা বেগম। স্বামীর বাড়ি একই উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামে। স্বামী প্রবাসী। এক ছেলে সন্তান রয়েছে তাদের। ছেলেকে নিয়েই সদর চৌরাস্তায় জলিল ও কবিরের তিন তলা বিল্ডিয়ের তৃতীয় তলায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন রেহানা বেগম। ঘটনার দিন ছেলেকে বাসায় রাখেননি রেহানা বেগম। নিহত মো. আলম দাউদকান্দি উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে পিয়ন (এমএলএসএস) পদে কর্মরত ছিলেন। সে হোমনা পূর্বপাড়া গ্রামের মো. আক্তার হোসেনের ছেলে। রেহানা বেগমের সঙ্গে আলমের বিশেষ সম্পর্ক অনেক দিনের। এর সুবাদে সেদিন দাওয়াত খেয়ে নিজ বাসায় না গিয়ে রেহানা বেগমের বাসায় রাত কাটান তিনি।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, রেহানা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি এখনও বন্ধ রয়েছে। তাকে পেলে অনেক তথ্যই উদঘাটন হবে। তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন থেকেই তাদের মধ্যে পরকীয়া এবং অনৈতিক সম্পর্কের কথা শোনা যায়। এরই কারণে হয়তো ওই বাসায় গিয়েছিল আলম। বৃহস্পতিবার কারারকান্দি গ্রামের বন্ধুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিলেন আলম। পরে ওই নারীর বাসায় যায়। সেখানেও হয়তো অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা যৌন উত্তেজক ওষুধ খেয়েছে। এতে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হতেও পারে। তার পরিবারের লোকজন বলেছে- আগে থেকেই সে হার্র্টের রোগী। নিয়মিত ওষুধ নাকি খেতেন। অবশ্য পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট এলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর চার টার দিকে পরকীয়া প্রেমিকা রেহানা বেগমের বাসায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় একই এলাকার মো. আলমের। গভীর রাতে আলম অসুস্থ হয়ে পড়লে আলমের এক বন্ধুকে ফোনে ডেকে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সঙ্গে সঙ্গে রেহানা বেগম হাসপাতালে তার ভুল ঠিকানা ও ছদ্দনাম রিপা উল্লেখ করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেম করায়। পোস্ট মর্টেম শেষে সন্ধ্যায় তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের কন্যা  মোসাঃ আয়শা আক্তার আঁখি হোমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।