এবার সোস্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট হারাতে পারেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট
জেইর বোলসোনারো। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদনে অনুমোদন দিয়েছে
দেশটির সিনেটের একটি তদন্ত কমিটি। বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে
অপরাধ, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়াসহ নয়টি অপরাধের জন্য তাকে
অভিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।
তাকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি তার সোস্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট স্থগিত
করার আহ্বান জানিয়েছে সিনেটের তদন্ত কমিটি। সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে
তিনি যেন করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াতে না পারেন সেজন্যই এমন
পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তবে সোস্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট স্থগিতের আদেশ না দেওয়ার জন্য সুপ্রিম
কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বোলসোনারো। ২০২০ সালের এপ্রিলে বোলসোনারোর
সামাজিক মাধ্যমের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখারও আহ্বান জানিয়েছে সিনেটের তদন্ত
কমিটি।
মঙ্গলবার বোলসোনারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়
সেটি ছিল ১ হাজার ৩শ পৃষ্ঠার। বিরোধী দলের নিয়ন্ত্রিত কমিটির এই প্রতিবেদন
তৈরি করতে ছয় মাস সময় লেগেছে। আরও ৭৭ ব্যক্তি এবং দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধেও
অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ব্রাজিলে ৬ লাখের বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বে
করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিলের অবস্থান।
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিষয়ে উদাসীন ছিলেন
বোলসোনারো। দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব, বিধিনিষেধ এবং মাস্ক পরারও বিরোধী
ছিলেন তিনি। নিজে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও এ বিষয়ে কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করেননি। এমনকি ভ্যাকসিনেরও বিরোধিতা করে আসছেন এই ব্রাজিলিয়ান
প্রেসিডেন্ট।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ভুল তথ্য প্রকাশের অভিযোগও
রয়েছে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে তাকে
জনসমাবেশে মাস্ক ছাড়াই অংশ নিতে দেখা গেছে। এসব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও
নিজের জায়গায় অনড় ছিলেন তিনি।
স্থানীয় সময় বুধবার দেশটির শীর্ষ পাবলিক প্রসিকিউটরের কাছে ওই
প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়। বোলসোনারোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ওই প্রসিকিউটরকে বোলসোনারোই নিয়োগ দিয়েছেন। তাই ধারণা
করা হচ্ছে তিনি হয়তো এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন না এবং
তাকে অভিযুক্তও করা হবে না।
এদিকে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে বোলসোনারোর একটি
ভিডিও সরিয়ে দেয় ফেসবুক এবং ইউটিউব। ওই ভিডিওতে তিনি দাবি করেছিলেন, করোনার
ভ্যাকসিনগুলো এইডসের বিকাশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার এমন ভুল তথ্যের কারণেই
তার পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হয়।