ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেবিদ্বার বদলে যাওয়া ভূমি অফিস
Published : Friday, 29 October, 2021 at 12:00 AM, Update: 29.10.2021 1:41:41 AM
দেবিদ্বার বদলে যাওয়া ভূমি অফিসশাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
দেবিদ্বার ভূমি অফিসে প্রবেশের পথেই চোখে পড়বে সুবিশাল নতুন গেইট। প্রবেশের পর ভিতরে রয়েছে নিরিবিলি পরিবেশের গণশুনানী কেন্দ্র ‘দক্ষিণ দুয়ার’ নামে  বসার একটি জায়গা। এখানে প্রতি বুধবার জমি জমার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গণ শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। ভূমি সংক্রান্ত কাজে দূর দূরান্ত থেকে সেবা গ্রহীতারা এসে বিশ্রাম নিতে পারেন। অফিসের পাশে রয়েছে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪লক্ষ মানুষের জন্য ‘হেল্প ডেস্ক’। জমি-জমার ঝামেলা নিয়ে যাঁরা এই কার্যালয়ে আসেন, তাঁরা যাতে দালালের হাতে না পড়েন, সে জন্য  এই হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা। ভূমি অফিসের উত্তর পাশে রয়েছে সবজি বাগান। বাগানে বিভিন্ন জাতের সবজিসহ চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। তথ্যপ্রযুক্তি ও যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়ে ভূমি অফিসকে সেবাগ্রহীতাদের আস্থার জায়গায় পরিণত করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন।    
কয়েক বছর আগেও এ কার্যালয়ের চেহারা ছিল অন্য রকম। অন্য সব সরকারি কার্যালয়ে যেমন থাকে। কিন্তু  মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন এ কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগ দেওয়ার পরই বদলে যায় সবকিছু। এখন প্রতিটি কাজের জন্য সার্ভিস চার্জ কত, তা বড় করে লিখে রাখা আছে, কারও কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে আলাদা সেবার ব্যবস্থা। দালালমুক্ত ভূমি অফিসে এসে সেবা প্রত্যাশীরা খুবই খুশি।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভূমি অফিসে যান এ প্রতিবেদক। এসিল্যান্ড মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন আন্তরিকতার সাথে সমস্যার সমাধান করেন। তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি এ অফিসে যোগদানের পর সকাল ৯টা থেকে রাত অবধি পর্যন্ত জমি-জমার বিষয়াদি শুনানিসহ অন্যান্য কাজ করে থাকেন।
বুধবার ওই কার্যালয়ে কথা হয় সেবাগ্রহীতা রমেন দাসের সাথে। তিনি খারিজ সংক্রান্ত কাজে ভূমি অফিসে এসেছিলেন।  তিনি জানালেন, ন্যায্য সুবিধাই পাওয়া গেছে ভূমি অফিসে। বাড়তি সুবিধার জন্য অফিসের কাউকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়নি। সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়েছি।
বড়শালঘর ইউনিয়নের প্রজাপ্রতি গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন জানান, প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি যে এত সহজে জমির ঝামেলা শেষ হবে। এসিল্যান্ড গিয়াস উদ্দীন অত্যান্ত চৌকশ ও বুদ্ধিমান। তিনি সহজেই আমাদের দুই পক্ষের জমি সংক্রান্ত বিবাদ মীমাংসা করে দিয়েছেন।
দেবিদ্বার ভূমি অফিসের এমন বদলে যাওয়ার কারিগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘সত্যি বলতে দুর্নীতিমুক্ত অফিস গড়ার কাজটা মোটেও সহজ নয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কর্মচারীদের বোঝানো, অবশ্য এখন জনগণকে উপযুক্ত সেবা দিতে পারছি। অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা ইতিবাচক ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।  সেবাগ্রহীতারা যাতে এখানে এসে কোন রকম হয়রানীর শিকার না হয় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন ‘যার জমি, তিনি নিজে যদি আসেন, তাহলে দুর্নীতি অনেক কমে যায়। তবে অনৈতিক কাজে অফিসের কেউ জড়িত থাকলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলেও তিনি জানালেন।