Published : Friday, 29 October, 2021 at 12:00 AM, Update: 29.10.2021 1:41:46 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
প্রাচীন
স্থাপত্যের নিদর্শন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার নূর মানিকচর মসজিদ।
পঞ্চদশ শতাব্দীর আগে মরহুম সৈয়দ নূর আহমেদ কাদেরী পীর সাহেব এ মসজিদটি
নির্মাণ করেন। সৈয়দ নূর আহমেদ কাদেরী পীর সাহেব’র নামানুসারে ওই গ্রামের
নামকরণ করা হয় নূরমানিকচর গ্রাম। এ গ্রামের লোকমুখে রয়েছে মসজিদের নানা
কল্পকাহিনী। তবে বর্তমানে সঠিক নজরদারী ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে
মসজিদের স্থাপত্যকলা। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে মসজিদটির ইতিহাস ঐতিহ্য ও
স্থাপনান নিদর্শন। নূর মানিকচর মসজিদটির অবস্থান কুমিল্লা শহর থেকে
১৮কিলোমিটার পশ্চিমে এবং 'ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দেবিদ্বার উপজেলার
সুলতানপুর ইউনিয়নের নূর মানিকচর বাস স্টেশনের আধা কিলোমিটার উত্তরে।
গত
রবিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দেবিদ্বার উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন নূর
মানিকচর মসজিদ। যার বয়স আনুমানিক ৫০০শ’ বছর। সাতগম্ভুজ বিশিষ্ট মসজিদটির
দৈর্ঘ্য ১০ফুট, প্রস্থ্য ৫ ফুট। একসঙ্গে ৪০/৫০ জন মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে
পারেন। চুন-সুরকী দিয়ে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে অপরুপ কারুকাজে সজ্জিত।
মসজিদের ছাদে রয়েছে ১১টি গম্বুজ। এর মধ্যে মূল ছাদে রয়েছে ৭টি এবং বাকী
চারটি গম্বুজ রয়েছে মসজিদের চারকোণায়। মসজিদের প্রাচীণ ইতিহাস ও কুমিল্লা
জেলা প্রশাসকের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, দেবিদ্বার উপজেলায় যারা ইসলামের
আলো জ্বেলেছিলেন তাঁদের মধ্যে নূর মানিকচর মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ নূর
আহম্মেদ আল কাদেরী পীর সাহেব একজন। এ মসজিদের পাশেই রয়েছে তাঁর কবর। পঞ্চদশ
শতাব্দীতে মুসলিম সভ্যতার জুমার নামাযের পড়ার জন্য নূর মানিকচর গ্রামে এ
মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা
সৈয়দ নূর আহম্মেদ আল কাদেরী পীর সাহেব একজন ধর্মপ্রাণ ও দানবীর ছিলেন। তিনি
মসজিদ ছাড়াও ডাকঘর, মক্তব, পাঠশালা নির্মাণ ও একটি দিঘী খনন করে গেছেন।
তারা দাবি করেন যে, মসজিদটি রক্ষা করতে হলে সরকারি ভাবে সংস্কার করতে হবে।
মসজিদের
সহ সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, মসজিদটি ছোট হওয়ায় পিছনের দিক দিয়ে
আলাদাভাবে বারান্দা নিমার্ণের কাজ চলছে। এ পুরাতন মসজিদটি রক্ষার জন্য
চেষ্টা করছি। তবে সরকারিভাবে কোন অনুদান পেলে মসজিদটির রঙ, চুনা ও
প্লাস্টার করা যেত।
মসজিদের সভাপতি মাও. মো. মোর্শেদ আলম জানান,
সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে সবকটি গম্বুজই ধ্বংসের পথে। রঙ, চুনা ও
প্লাস্টারে অভাবে মসজিদের বাহিরের আস্তরগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ
জায়গা থেকে আস্তরগুলো খসে পড়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে মসজিদের দেয়ালে শেওলা
জমেছে। জানালার গ্রীলে মরিচা ধরেছে। দ্রুত এ মসজিদটি সংস্কার করা না হলে
হারিয়ে যাবে ৫০০ বছরের পুরানো এ স্থাপনাটি।