যৌথ পরিবারের অনুপম দৃষ্টান্ত সুলতানপুর গ্রামের হাজী রুস্তুম আলী
Published : Monday, 1 November, 2021 at 12:00 AM
মো. মিজানুর রহমান ||
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশর্^বর্তী সুলতানপুর গ্রাম নানা কারণে আলোচিত। বিজয়পুর ইউনিয়নের এ গ্রামের মধ্যে যৌথ পরিবারের অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পশ্চিমপাড়া হাজী বাড়ির মরহুম মোঃ আব্দুর রহিমের চতুর্থ ছেলে হাজী মোঃ রুস্তুম আলী (৯২)। তিনি ও তাঁর স্ত্রী হাজী হাজেরা বেগমের দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও তাদের ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে এবং তাদের পুত্রবধূদের আন্তরিকতার কারণে তাঁরা এখনো যৌথ পরিবারে আবদ্ধ রয়েছেন। ভিনদেশী কৃষ্টি কালচারে আজ আমাদের সমাজকে গ্রাস করার কারণে নানা স্বার্থের দ্বন্দে জড়িয়ে সমাজে যখন ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ আর বিষাদে পরিপূর্ণ। ঠিক তখনো তাঁরা মিলেমিশে একাকার রয়েছেন যৌথ পরিবারে।
সুলতানপুর গ্রামের হাজী মোঃ রুস্তুম আলীর বড় ছেলে মোঃ গোলাম মোস্তফা একজন সমাজকর্মী। দ্বিতীয় ছেলে মোঃ হুমায়ুন কবির ও তৃতীয় ছেলে মোঃ ফরিদ আহমেদ ব্যবসায়ী। চতুর্থ ছেলে মোঃ এরশাদ হোসেন ও পঞ্চম ছেলে মোঃ শাহীন মিয়া ইটালী প্রবাসী। একমাত্র মেয়ে রীনা আক্তার (গৃহিনী) বর্তমানে স্বামীর বাড়িতে রয়েছেন। পরিবারের লোক সংখ্যা ছোট বড় মিলিয়ে ২৪ জন। এর মধ্যে ৮ জন ইটালীতে রয়েছেন। জাঙ্গালিয়া গ্রামের হাজী আব্দুল ওহাবের পুত্র ব্যবসায়ী মোঃ শাহজাহান, শাকতলা গ্রামের মরহুম আব্দুল মালেকের পুত্র সংবাদকর্মী এহতেশামুল আরেফীন রুমেল ও বেলতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক এবং সুলতানপুর দক্ষিণ পূর্বপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, উক্ত পরিবারটি এলাকার যৌথ পরিবারের মডেল। গ্রামে যৌথ পরিবার প্রথা বর্তমানে ভেঙ্গে পড়েছে। দুই ভাইও বিয়ের পর একসঙ্গে যৌথ পরিবারে থাকতে পারছেন না। কিন্তু তাঁরা ৫ ভাই দীর্ঘদিন যাবৎ একসঙ্গে যৌথ পরিবারে রয়েছেন। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের অসহায় মানুষের পাশে সবসময় নিঃস্বার্থভাবে ঐপরিবারের লোকজন দাড়িয়েছে। কোন কন্যা দায়গ্রস্ত পিতার আর্থিক সহায়তা কিংবা কোন অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসার্থে সহায়তা করতে কখনো পিছপা হননা উক্ত পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের মসজিদ কিংবা মাদ্রাসায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন অকাতরে। করোনাকালে নিজের গ্রাম ছাড়াও পাশর্^বর্তী গ্রাম গুলোতেও চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন কয়েক দফা শতাধিক পরিবারের মধ্যে। যৌথ পরিবার আপনার কেমন লাগে ? জানতে চাইলে হাজী মোঃ রুস্তুম আলী জানান, পরিবারের সকলকে নিয়ে একসঙ্গে খাবার খেতে ও তাদের সঙ্গে গল্প করতে তাঁর অনেক আনন্দ লাগে। তিনি এখনো সবাইকে যৌথ পরিবারে ধরে রাখতে পেরে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করেন।